অনলাইন ডেক্স::
আজীবন নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে গেছেন ফিদেল কাস্ত্রো। ১৯৭১-এ যখন এই বাংলাদেশের মুক্তির আন্দোলনেও সমর্থন যুগিয়েছিলেন কমিউনিস্ট আন্দোলনের এই কিংবদন্তি। যাঁর ডাকে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো সেই নেতা, বঙ্গবন্ধুি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিও ছিলো ফিদেল কাস্ত্রোর অসীম শ্রদ্ধা। বঙ্গবন্ধুকে হিমলায়ের সাথেও তুলনা করেছিলেন ফিদেল। তিনি আমৃত্যু ছিলেন বাংলাদেশপ্রেমি।
শুক্রবার রাতে না ফেরার দেশে চলে যাওয়া কিউবান এই বিপ্লবীর সাথে তাই বাংলাদেশেরও রয়েছে কৃতজ্ঞতার সম্পর্ক। সেই কৃতজ্ঞতা থেকে ফিদেলকে সম্মাননাও দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
১৯৭৪ সালে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বঙ্গবন্ধু যখন দাঁড় করাতে কাজ করছিলেন তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশেকে খাদ্য সহায়তা দিতে অপরাগতা জানায়। সে সময় ফিদেল কাস্ত্রো বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশন থেকে ৫০ লাখ ডলারের বিনিময়ে ৪০ লাখ চটের ব্যাগ ক্রয় করেন কিউবার জন্য। যা তখন বাংলাদেশের চরম সংকট মোকাবেলায় বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে ফিদেলকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায়’ ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে জোটবহির্ভূত দেশগুলোর এক বৈঠকে দেখা হয় শেখ মুজিবুর রহমান ও ফিদেল কাস্ত্রোর। দুই অঞ্চলের দুই কিংবদন্তি, মানুষের অধিকার আদায়ের দুই সংগ্রামী নেতার সাক্ষাত হয় তখন।
এসময় বঙ্গবন্ধুকে দেখে ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসিকতায়, এই মানুষই হিমালয়। তাই আমার হিমালয় দেখা হয়ে গেলো।’
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কাস্ত্রোর এ কথা বাংলাদেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাবে কিউবার সাবেক এ নেতার প্রতি।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় ও বিভিন্ন দুর্যোগেও বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এই নেতা।
১৯৭৫ সালে বহঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। শুক্রবার চলে গেলেন ফিদেলও। শারিরীকভাবে না থাকলেও আজীবন থেকে যাবে এই দু’জনের লড়াই সগ্রামের ইতিহাস। যা প্রেরণা জোগাবে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ৯০ বছর বয়সী এ নেতার জীবনাবসান হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। ফিদেলের ভাই এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোই তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।