হাওর ডেস্ক::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তনদী জাদুকাটা নদীতে ও নদীর তীরে পরিবেশ ধ্বংসী নদীতে ব্যবহার নিষিদ্ধ বোমা ড্রেজার সেইভ মেশিনে বালু পাথর উক্তোলন বন্ধ করনে এবং এসব অবৈধ যান্ত্রিক মেশিন নদী থেকে অপনারণের দাবিতে মানববন্ধন এবং সমাবেশ পালিত হয়েছে।,
ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র আয়োজনে নদী রক্ষা কমিশন, পরিবেশ অধিদপ্তর , সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে এ দাবি তুলে ধরে মানববন্ধন ও সমাবেশ পালিত হয়েছে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খাঁনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে বক্তারা বলেন , সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সীমান্তনদী জাদুকাঁটা গত প্রায় দেড়যুগ সময় ধরে গুটি কয়েক প্রভাবশালী ব্যাক্তি ব্যবহার নিষিদ্ধ অবৈধ বোমা, ড্রেজার, সেইভ মেশিনে সময় সুযোগ বুঝে নদীর বড়টেক সহ একাধিক তীর কেটে বালু পাথর লুটে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। অতচ এক সময় পর্যটক বান্ধব ও নি¤œ আয়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজনের জীবন জীবিকা নির্বাহের উৎস হিসাবে হাতে , বেলচা বা বালতিতে করে যারা পরিবেশ রক্ষা করে বালু পাথর, লাকড়ি, বাংলা কয়লা উক্তোলণ করতেন সেসব শ্রমজীবী শ্রমজীবী লক্ষাধিক মানুষজন আজ যান্ত্রিক দানবদের কারনে নদী হতে স্বাভাবিক আয় রোজগারের পথ বন্ধ হওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। জেলার সিংহভাগ মা মাছের চাহিদা পুরণযোগ্য দেশে মিঠা পানির আবাসস্থল জাদুকাটা (বড় গাঙ}’র প্রতিবছর মাছের অভয়াশ্রম ধ্বংস করা হয়েছে।
সীমান্তনদী জাদুকাটার রূপ-সৌন্দর্য আর প্রাকৃতিক সম্পদের কারনে সুনামগঞ্জ জেলা তথা তাহিরপুর উপজেলার রয়েছে বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্ব। কিন্তু, সীমান্ত নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহের পথ রুদ্ধ করে নদীটির উৎসমুখ, ঘাগটিয়ার বড়টেক, বরইবাগ, আদর্শগ্রাম ও বিন্নাকুলির জাঙ্গালহাটির সামনে নদীর বুকে এমনকি নদীর তীর কেটে সেইভ ড্রেজার বোমা মেশিশ ব্যবহার করে বালু পাথর লুটের কারনে নদী ও নদী তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ প্রতিবেশ বিপন্ন করা হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, সেইভ বোমা ও ড্রেজার মেশিন ব্যবহার কওে বালু পাথর উত্তোলনের ফলে শুধু মাছের অন্যতম প্রধান অভয়াশ্রম প্রজনন ক্ষেত্রই নষ্ট করা হচ্ছে না, বালুতে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহের পথ হয়ে যাওয়ায় ঢলের সময় বালুতে নদী ঘেষা ও নদীর দুই পাশের জমি, খাল-বিল, পুকুর ডোবা-নালা বসতভিটা ভরাট হচ্ছে আবারো পানির ধারণ ক্ষমতা না থাকায় নদীর দু কোল উপচে পানি ডুকে বসতি, স্থাপনা ভাঙ্গছে।
আমন বোরো জমি হয়ে পড়ছে চাষাবাদের অনুপযোগী। এমনকি, মাটিয়াইন, শন্তিপুর, করবুলা ,বলদা, রামসার প্রকল্পভুক্ত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ ছোট বড় ১৫ থেকে ২০ টি ফসলী হাওর ও মাছের আবাসস্থল বিল বা জলমহালে এর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। এতে মাছসহ অন্য জলজ প্রাণীর উপযোগী আবাসস্থল বিনষ্ট হচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক বা দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন ক্রমশ কমছে।
এ অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সীমান্তনদী জাদুকাটা হতে বোমা সেইভ ড্রেজার মেশিণ অপসারণ নদীর তীর কাটা বন্ধ করে হতদরিদ্র শ্রমিকদের হাতে বেলচায় বালতি দিয়ে নদী থেকে নুরী পাথর, বালু, কয়লা ও লাকড়ি এবং মাছ আহরণের সুযোগ তৈরী করে দেয়ার দাবি জানান নদী রক্ষা কমিশন, পরিবেশ অধিদপ্তর , সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে।
¡মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতা অ্যাডভোকেট সুজা আহমেদ, কৃষকলীগ সিলেট মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম রোকন, যুক্তরাজ্য যুবলীগের নেতা জাকেরী রেজা জয়, বানিপার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহম্মদ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক আতিক পূর্ণিয়া, সুনামগঞ্জ সমিতির দপ্তর সম্পাদক রাজিব কুমার রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয ছাত্রলীগের নেতা আরিফ হাসান সায়িম ও মাহমুদ হাসান তারেক প্রমুখ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুনামগঞ্জ, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশার অধ্যয়নরত শিক্ষর্থীরা উপস্থিত থেকে সংহতি প্রকাশ করেছেন।