স্টাফ রিপোর্টার::
কিশোর গ্যাং’র তিন সদস্যকে সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ আটক করেছেন।,
আটককৃতরা হলেন,জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য সফর মেম্বারের সহোদও ভাই শাহজাহানের ছেলে রাজিব হোসেন ওরফে রাজিব হাসান (১৮), উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের পৈলনপুর গ্রামের নানু মিয়ার ছেলে মোরসালিন আহমদ (১৮)ও তাদের অপর সহযোগী একই উপজেলার বাদাঘাট উওর ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে রতন মিয়া (২৪)।,
চুরি করে নিয়ে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল বিক্রয় চেষ্টাকালে রবিবার সন্ধায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী চৌমুহনী বাজার হতে ওই তিন মোটরসাইকেল চোরকে ডিবি পুলিশ আটক করেন।,
এ সময় তাদের হেফাজতে থাকা চুরি হওয়া একটি প্লাটিনা ১০০ সিসি মোটরসাইকেল আলামত হিসাবে ডিবি পুলিশ জব্দ করেন।, যার (ইঞ্জিন নং-চঋণডঔএ২৭৬৭৩,চেসিস নং-গউতঅ৭৬অণ৮ঔডএ৮৮৯৭৭) ।,
রবিবার রাতে মোটরসাইকেল মালিক তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উওর ইউনিয়নের পৈলনপুর গ্রামের রহমত আলীর ছেলে ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম আটক তিন জনের নামোল্ল্যেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরো দু’জনসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মোটরসাইকেল চুরির একটি মামলা দায়ের করেন।,
সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মিডিয়া সেলের সমন্বয়কারি এসআই আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ব্যবসায়ী খায়রুলের গ্রামের বাড়ি তাহিরপুরের পৈলনপুর হতে তারই মালিকানাধীন একটি প্লাটিনা মোটরসাইকেল গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধার পর ধৃত প্রধান আসামী রাজিবের নেতৃত্বে একদল সংঘবদ্ধ চোর কৌশলে গাড়ির লক (তালা ভেঙে) চুরি করে নিয়ে যায়।,
পরবর্তীতে মোটরসাইকেলটি রবিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চৌমুহনী বাজারে বিক্রয় চেষ্টাকালে বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীগণ ও উপস্থিত জনতার সন্দেহের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গাড়ি চোর চক্রের দুই সদস্য কৌশলে পালিয়ে যায়।
এরপর উক্তেজিত ব্যবসায়ীগণ ও জনতা কিছুটা উওম মধ্যম দিয়ে মোটরসাইকেলসহ গাড়ি চোর চক্রের মুল হোতা রাজিব সহ তিন সদস্যকে আটক রেখে ডিবি পুলিশে খবর দেন।,
স্কুল ছাত্র রাজিব ও মোরসালিন: সরজমিনে সোমবার সকালে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় ডিবি পুলিশের হাতে আটক রাজিব হোসেন ওরফে রাজিব হাসান উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবা উপজেলার কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য সফর মেম্বার এর সহোদর শাহজাহান মিয়া পেশায় বালু -পাথর ও কয়লা ব্যবসায়ী।
ছেলেকে ভাল প্রতিষ্টানে লেখাপড়া করানোর জন্য তিনি গ্রামের বাড়ি ছেলে উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাটের কামড়াবন্দ গ্রামে ভাড়াটিয়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।,
রাজিবের সাথে আটককৃত মোরসালিন আহমদ উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র।,
তার বাবা উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের বাসিন্দা নানু মিয়া বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাট বাজারের পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী।,
মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় উপজেলার বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক,একাধিক শিক্ষার্থী ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন জানান- লেখাপড়ার নামে রাজিব ও মোরসালিন বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ও এর আশেপাশের এলাকার ১০ থেকে ১২ জন কিশোর স্কুলছাত্র এবং বখাটে কিশোরকে সংগঠিত করে কৌশলে নিজেদের দলে ভিড়িয়ে একটি কিশোর গ্যাং তৈরী করে।,
এ জুটির হাতে গত কয়েকমাসে বাদাঘাট বাজারে কিশোরদের মধ্যে কয়েকটি মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে আসা ডজন খানেক স্কুল ছাত্র তাদের তৈরী কিশোর গ্যাং’র সদস্যদের হাতে ইতিমধ্যে নাজেহাল ও মারধরের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দামি মুঠোফোন ব্যবহার করা, অপ্রাপ্ত বয়সে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালনা, হাওরে অতি ভাড়ায় স্পীডবোডে ভ্রমণ, নেশাদ্রব্য সেবন, বখাটেপনা, স্কুল ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করা ছাড়াও স্টেপ আতংক সৃষ্টি, হামলা- মারধর, হুমকি দিয়ে নিরীহ পরিবারের কিশোর ও স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক ভয়-ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছেন এ গ্যাং’র সদস্যরা।,
অভিযোগ রয়েছে মানসিক চাঁেপ রেখে এলাকার নিরীহ কিশোর ও স্কুল ছাত্রদের ভয় ভীতি দেখিয়ে বশে আনতে এ কিশোর গ্যাং’র সদস্যরা প্রকাশ্যে গোপনে ধারালো চাঁকু, নাইফ, পানচ,লোহার রড, কাঠের রোল প্রায়ই সাথে নিয়ে চলাফেরা করতেন।
রাজিব-মোরসালিন জুঠির আদলে উপজেলার বাদাঘাট এলাকায় বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ছাড়াও অন্য দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাহিরে আরো একাধিক কিশোর গ্যাং তৈরী করা হয়েছে। এসব কিশোর গ্যাং এখন এলাকার নিরীহ পরিবারের স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগামী ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য মানসিক চাঁপ, যৌন হয়রানী, ও আতংক সৃষ্টি করছে।