হাওর ডেস্ক::
লবণের দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকা হয়ে যাচ্ছে’ এমন গুজব ছড়িয়ে সুনামগঞ্জে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করেছে দুবৃত্তরা। এসময় মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা দুই ঘণ্টায় বাজারের সব লবণ উধাও করে দেয়। সোমবার রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে সুনামগঞ্জ শহরে গুজবের প্রভাবে লবণের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে হঠাৎ। অতিরিক্ত লাভের আশায় একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে এমন গুজব ছড়ায়। তবে এই গুজব ছড়াতে জামায়াত বিএনপির একটি চক্রকে তৎপর দেখা গেছে।
এই গুজবের মধ্যেই সোমবার রাতে সুনামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দোকানে বেশি দামে লবণ বিক্রি করছে মোনাফাখোররা। এছাড়া বেশি মুনাফার লোভে অনেক দোকানি লবণ বিক্রি বন্ধ করে দেন। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে লবন নিয়ে গুজবে কান না দিতে জনতাকে অনুরোধ জানান। পুলিশও গুজবের পর মাঠে নেমে তৎপরতা চালায়।
এদিকে, গুজব রোধে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসন চারটি পৃথক অভিযান পরিচালনা করে। দোকানে দোকানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি না করতে বলা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
রাত ৮টা থেকে শহরের আলফাত স্কয়ার এলাকার হৃদি ভেরাইটিজ স্টোর, রহমান বেকারি এন্ড কনফেকশনারি, গৌরাঙ্গ স্টোর, দাস ব্রাদার্সসহ অন্যান্য দোকানগুলোতে লাইন বেঁধে লবণ কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। প্রতি কেজি লবণের দাম ৩৫ টাকা হলেও হৃদি ভেরাইটিজ স্টোর ৫০ টাকা দরে লবণ বিক্রি করে। তবে সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখে ফের ন্যায্যমূল্যে লবণ বিক্রি করতে থাকে সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে রহমান বেকারি এন্ড কনফেকশনারিতে ‘স্টক শেষ হয়ে যাওয়ায়’ ক্রেতারা লবণ কিনতে পারেননি। রহমান বেকারি বেশি দামে বিক্রি করতে লবন সড়িয়ে ফেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একটি অসাধু চক্র লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এমন গুজব ছড়ানোর সাথে সাথে লবণ কিনতে দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যেই শহরের বিভিন্ন দোকানের সব লবণ শেষ হয়ে যায়।
তবে সচেতন মহল এই গুজবে জনসাধারণকে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, পেঁয়াজের দামের অস্থিতিশীল অবস্থার সুযোগ নিয়ে একটি অসাধু চক্র এই গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুর রহমান বলেন, গুজব সৃষ্টিকারীদের ধরতে আমরা মাঠে নেমেছি। ব্যবসায়ীদের কেউ এই গুজবের সাথে জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, লবণ নিয়ে গুজব রোধে পুলিশের চালানো অভিযানের সময় জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মুক্তাদীর হোসেন জানান, বাজারে লবণের কোন সংকট না থাকলেও একটি অসাধু চক্র জনসাধারণের মাঝে গুজব সৃষ্টি করে লবণের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান শুরু করে।
তিনি বলেন, আমরা দোকানে দোকানে গিয়ে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি না করতে বিক্রেতাদের সতর্ক করে দিয়েছি।