হাওর ডেস্ক ::
এতোদিন স্যাটেলাইট ব্যবহারের জন্য শুধু দেশ থেকে ডলার বেরিয়ে যেত। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বরং সেই পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিচ্ছে উল্টো দিকে। দেশের একমাত্র স্যাটেলাইটের কাছ থেকে ক্যাপাসিটি কিনতে এরই মধ্যে আলোচনা প্রায় শেষ করে এনেছে নেপালের একটি ডিটিএইচ কোম্পানি। তারা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাই-১ এর ৫টি ট্রান্সপন্ডার কিনবে।
সব আলোচনা শেষে এখন দরদাম চূড়ান্ত করার কথা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)।
নেপালের নিজস্ব স্যাটেলাইট নেই। পাহাড় ঘেরা দেশটিতে একই সঙ্গে সেবা দিচ্ছে অন্তত চারটি স্যাটেলাইট। ফলে, দামের বিষয়টি সেখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন বিসিএসসিএলের কর্মকর্তারা।
প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে যে দামে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি তারা বিক্রি করছেন তার চেয়েও কম দামে নেপালে ক্যাপাসিটি বিক্রি করা হতে পারে।
বলা হচ্ছে, বাজার ধরতেই এ প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে সরকারি কোম্পানিটিকে। দেশের মধ্যে টেলিভিশনগুলোর কাছে প্রতি মেগাহার্ডজ ক্যাপাসিটি মাসে সাড়ে তিন হাজার ডলার মূল্যে বিক্রি করছে বিসিএসসিএল।
বেশ খানিকটা ছাড় দিয়ে এ মূল্য দাঁড়াচ্ছে আড়াই হাজার ডলারে কিন্তু নেপালে দুই হাজার ডলারের মধ্যে বিভিন্ন স্যাটেলাইটের ক্যাপাসিটি মিলছে। সুতরাং, প্রতিযোগিতা করতে হলে সেখানে বিসিএসসিএলকে মূল্য কমাতেই হবে বলছিলেন স্যাটেলাইট কোম্পানির এক কর্মকর্তা।
তবে এর আগে বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলো স্টার অ্যালায়েন্সের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার ডলারে ক্যাপাসিটি কিনতো। এর বাইরে ফিলিপাইন থেকে অন্তত চারটি ট্রান্সপন্ডার ক্যাপাসিটি বা ১৪৪ মেগাহর্ডজ ব্যান্ডউইথ কেনার জন্যে আলোচনা করছে একটি কোম্পানি।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমায় হওয়ায় ফিলিপাইনের মতো আশপাশের দেশগুলোকে এ স্যাটেলাইটের ফুট প্রিন্ট সবচেয়ে ভালো পড়েছে। ফিলিপাইনসহ আশপাশের দেশগুলোর বাজার টার্গেট করে সেখানে একটি ল্যান্ডিং স্টেশনও করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, ফিলিপাইনে অন্তত ৭টি স্যাটেলাইট ব্যবসা করছে। সে কারণে সেখানে দামের প্রতিযোগিতা আরও বেশি।
বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশের মধ্যেই স্যাটেলাইট ক্যাপাসিটির অনেক চাহিদা। সে কারণে তারা মূলত দেশের বাজারকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন।
এর আগে স্যাটেলাইটের মোট ক্যাপাসিটির অর্ধেকটা দেশের মধ্যে ব্যবহার করে বাকি অর্ধেক দেশের বাইরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করার পরিকল্পনা করলেও এখন সেখান থেকে তারা খানিকটা সরে আসছেন বলেও জানান শাহজাহান মাহমুদ।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মোট সক্ষমতা রয়েছে ৪০ ট্রান্সপন্ডার। যেখান থেকে এরই মধ্যে দেশের ভেতর বিক্রি হয়ে গেছে ২৬ শতাংশ। এ থেকে বিসিএসসিএলের মাসে আয় হচ্ছে ১০ কোটি টাকার বেশি।
গত বছর মে মাসে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণ হলেও বিসিএসসিএল এটি বুঝে পায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে।