পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১০ দিন পেঁয়াজ না খাওয়ার ঘোষণা দিলেন সিলেটের গৃহিনীরা। বুধবার বিকালে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সম্মুখে এক প্রতিবাদী মানববন্ধনে গৃহিনীরা এ ঘোষণা দেন।
পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদস্বরূপ বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক গৃহিনী।
এসময় গৃহিনীরা বলেন, সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। পেঁয়াজ একটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, রান্নাকে সুস্বাদু করার জন্য পেঁয়াজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এজন্য পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গৃহিনীদের এগিয়ে আসতে হবে। রান্নার কাজে আগামী ১০ দিন পেঁয়াজ বয়কট করতে হবে। এতে মজুদদাররা সঠিক জবাব পাবে বলে তারা মন্তব্য করেন।
দুই মাস ধরেই দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা চলছে। দফায় দফায় দাম বেড়ে বর্তমানে ২৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজের এই সংকটের শুরু সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে। ভারত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম মূল্য ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়। এরপরের ধাক্কা আসে ২৯ সেপ্টেম্বর, ভারত রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। এ ধাক্কায় ৫০ টাকার পেঁয়াজ ১৫০ টাকা ছাড়ায়, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দর। এরপর লাফ দিয়ে পেঁয়াজের দর প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় ওঠে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের পর। এরপর দাম কিছুটা কমেছিল। গত মঙ্গলবার থেকে দাম আবার বাড়ছিল।
সোমবার দেশি পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকার কারণ জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাঁরা বলেন, পেঁয়াজ এখন নেই। তারপরও যেটুকু আছে তা আগামী সপ্তাহ দেড়েকের মধ্যে বিক্রি শেষ করতে হবে। শ্যামবাজারের নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, শীত পড়ে গেছে। এখন দেশি পেঁয়াজ রেখে দিলে গাছ বেরিয়ে যাবে। ভালো দাম পেয়ে মানুষ অপরিপক্ব পেঁয়াজ বাজারে নিয়ে আসছে। সব মিলিয়ে কিছুদিনের মধ্যে সরবরাহ বাড়বে আশা করা যায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও কিছুদিনের মধ্যে পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছে। গত রোববার এফবিসিসিআইয়ের বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ১০ দিনের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ পুরোদমে উঠতে শুরু করবে। এ ছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজের চালান জাহাজে আসবে। সিটি গ্রুপের একটি চালানে পেঁয়াজের কেজিপ্রতি ব্যয় ৩২ টাকার মতো পড়বে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, তারা ঢাকায় ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। ট্রাকের সংখ্যা ৫০। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে ৫ থেকে ১০টি করে ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।