সাইফ উল্লাহ::
সুনামগঞ্জের বোরো ফসল রক্ষায় হাওরের বাঁধ বেড়িবাঁধ নির্মাণের সমিক্ষার কাজ প্রাথমিক ভাবে শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ( পাউবো)। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনস্থ কালনার হাওর, করচার হাওর, জোয়ালভাঙ্গার হাওর, দেখার হাওর, হালির হাওর সোনামোড়ল হাওর, ধানকুনিয়ার হাওর, চন্দ্রসোনার থাল হাওর, মাতিয়ান হাওর, শনির হাওর, গুরমার হাওর, মহালিয়ার হাওর, পাকনার হাওর, কালিয়াকোটা হাওর, নলুয়ার হাওর, চাপতির হাওরসহ ছোট বড়ো ৪২ টি হাওরে ১ হাজার ৩৪ কিলোমিটার প্রি ওয়ার্ক জরিপের কাজ শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও টেকনিক্যাল টিম।
এসব হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন সহকারী প্রকৌশলী উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি উপকার ভোগীদের নিয়ে হাওরের গতবারের নির্মিত ফসল রক্ষা বাঁধের সব শেষ অবস্থা নির্ণয় করতে ও চলতি বছর ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণের ডিজাইন ও বরাদ্ধ নিশ্চিত করতে এ জরিপ করা হয়েছে। এতে বাঁধের বর্তমান অবস্থা উচ্চতা, প্রস্থ, পানির গভীরতাসহ বিভিন্ন কারিগরি তথ্য সংগ্রহ করা হয় বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৬টি টেকনিক্যাল টিম হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে জরিপ কাজ সম্পন্ন করেছে। চলতি বছর আগাম বন্যার হাত থেকে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানের জন্য ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে সরকার। সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী হাওর পাড়ের কৃষকদের মতামত নিয়ে গণশুনানির মাধ্যমে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) ৭ সদস্য বিশিষ্ট প্রকল্প কমিটি গঠন করে বাঁধের নিকটবর্তী এলাকার কৃষকদের নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফসল রক্ষা বাঁধের সর্বশেষ অবস্থা ও নতুন বাঁধ নির্মাণের ডিজাইন প্রণয়নের জন্য এই সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেকনিক্যাল পার্সনগন। পাউবো অধীনে ১০০০ কিলোমিটার বেরিবাঁধ ও ১৩৫টি ক্লোজার মেরামত করা হবে।
জামালগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল আহাদ বলেন,জামালগঞ্জ উপজেলায় পাউবোর কমিটিতে সাংবাদিক প্রতিনিধির বিষয়ে কোন সাংবাদিকই জানেনা। এনিয়ে উপজেলায় কর্মরত সকল গণমাধ্যমকর্মীদের ক্ষোভ বিরাজ করছে। কৃষক খালেক মিয়া বলেন, এলাকায় একটি মাত্র বোরো ফসল হয় এছাড়া আর কোন ধানের চাষ হয় না। এ ধানের উপর নির্ভও করে হাওরপাড়ের মানুষের জীবন। তাই তিনি ফসল রক্ষা বাধ নির্মাণের কাজ কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ি শুরু ও শেষ করার দাবি করে তিনি পাউবোর দুর্নীতিবাজ এসও নেহার রঞ্জনকে জামালগঞ্জ থেকে অপসারনের দাবী জানান। জামালগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল কবির বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধের সব শেষ অবস্থা ডিজাই প্রণয়ণে এই সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষার কাজ শেষ এখন হাওরের পানি কমলে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রথম ধাপের কাজ এটি। বাঁধ নির্মাণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই, অপ্রয়োজনীয় বাঁধ নির্মাণ থেকে বিরত থাকা ও সঠিক মেজারমেন্ট করতে এটি করা হয়। যাতে পরে কাজের গুণগতমান ও বরাদ্ধ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে। এবছর হাওরের যথা সময়ে আমরা ফসল রক্ষা বাঁধ নিমাণের কাজ শুরু ও শেষ হবে এজন্য তিনি সবার আন্তরিক সহযোগীতা কামনা করেন।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার এর মধ্যে হাইব্রীড ৩৬ হাজার ৫০০ হেক্টর, উফশী ১ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হবে। এজন্য ৮ হাজার ৭১৭ হেক্টর বীজ তলা তৈরি করা হয়েছে অথচ গেলবছর এই দিনে ১০ হাজার ১২৩ হেক্টর বীজ তলায় ধানে বীজ বপন করা হয়েছিলো।