অনলাইন ডেক্স::
কোচিং বাণিজ্য বন্ধের বিধান রেখে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে সরকার। শিগগিরই তা মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘ইন্টার-অ্যাকটিভ ডিজিটাল মাদ্রাসা টেক্সট বুকস’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য দেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, এই দেশে কোচিং বাণিজ্য চলবে না। নোটবই, গাইড বই চলবে না। আইনে এ বিষয়টি স্পষ্ট করে তুলে ধরা হবে। তবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে। শিক্ষক-অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতেই শিক্ষা আইন প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে শিক্ষকরা বেশি কমিটেড ছিলেন। ক্লাসের পর প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত আধ ঘণ্টাও ছেলেমেয়েদের বোঝাতেন। এখন আর সেটা হচ্ছে না। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, অন্যান্য শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে বসে ঠিক করতে হবে কীভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা যায়। এ ব্যাপারে একটা পথ খুঁজে বের করার চিন্তা-ভাবনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঘাড় থেকে কীভাবে পাঠ্যপুস্তকের বোঝা কমানো যায় এবং পাঠ্যবই সহজপাঠ্য করা যায়, সেটা আমাদের মূল লক্ষ্য। এখন এই প্রক্রিয়া আরও সহজ করা যায়। আমরা সে লক্ষ্যপূরণে কাজ করছি। কীভাবে ডিজিটালাইজড করা যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছি। এর ধারাবাহিকতায় মাদ্রাসা পর্যায়ে চারটি বই ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা চাইলেই কম্পিউটারে অথবা যে কোনও জায়গায় বসে নোটপ্যাড ও স্মার্টফোনে ওই চারটি বই পড়তে পারবে।’
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসা শিক্ষা ধারার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইসলামী ও আরবি বিষয়গুলোর ইন্টার-অ্যাকটিভ ডিজিটাল মাদ্রাসা টেক্সটবুক (আইডিএমটি)-এর উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উদ্যোগে ৬ষ্ঠ শ্রেণির চারটি টেক্সট বই- কুরআন মজিদ, আকাইদ ও ফিকাহ এবং আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের ডিজিটাল ভার্সন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ চারটি বই এখন অনলাইন বা অফলাইন সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মাধ্যম যেমন- কম্পিউটার, ট্যাব বা মোবাইল ফোনে পড়া যাবে। আইডিএমটিতে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় শব্দের অর্থ, বাস্তব উদাহরণ এবং ছবি ও ভিডিও সংযোজন করা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে দাখিল ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ই-লার্নিং সুবিধা নিতে পারবে। শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে বই বা কনটেন্ট বিনামূল্যে ডাউনলোড করে পড়তে পারবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন প্রি-প্রাইমারি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই উৎসবের মাধ্যমে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম ছায়েফ উল্যার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম কায়কোবাদ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঞা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বিল্লাল হোসেন এবং বুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. সোহেল রহমান।