বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঈনুল হক কলেজের অধ্যক্ষ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী দুই ছাত্রীকে কোদালের হাতল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন। আহত ওই দুই ছাত্রীকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
জানা গেছে কলেজের এইচ এসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শাখাইতি গ্রামের তাসলিমা খানম ও মাগুরা গ্রামের নাঈমা আক্তার নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য্য হয়। শনিবার দুপুর ১২টায় কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানায়। এসময় কলেজের বাগানে কাজরত অধ্যক্ষ মতিউর রহমান কোদালের হাতল দিয়ে ওই ছাত্রীকে বেধড়ক পিটাতে থাকেন। তাদের কান্নায় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় জয়নগর বাজারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে অধ্যক্ষের এই নির্মম আচরণে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে জয়নগর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে তার বিচার দাবি করেছে।
আহত ছাত্রী তাসলিমা খানম বলেন, আমি একজন এতিম মেয়ে। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছি। স্যারকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদেরকে কোদালের হাতল দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন। আমরা এখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আহত ওই ছাত্রী জানায়, প্রায় সময়ই স্যার আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। অশ্লীল কথাবার্তা বলেন।
জানা গেছে তিনি নিজের নিয়মে কলেজ চালান। নিজের ইচ্ছেয় ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। সম্প্রতি তার স্ত্রীকেও ভাইস প্রিন্সিপাল নিয়োগ করেছেন তিনি। কলেজ এমপিওকরণের যে কাগজপত্র তৈরি করেছেন এতে স্টাফ প্যাটার্নে তিনি তার সকল আতœীয় স্বজনকে স্টাফ দেখিয়ে কাগজ জমা দিয়েছেন।
হাসপাতালে নিয়ে আসার পর সদর থানার ওসি মো. শহিদুর রহমান আহত দুই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেন, আমি তাদেরকে মারধর করিনি। শাসন করেছি।
সদর থানার ওসি মো. শহিদুর রহমান বলেন, আমি খবর পেয়ে দুই ছাত্রীর সঙ্গে এসে হাসপাতালে কথা বলেছি। তারা বা তাদের পরিবার অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ মিছিল করিয়েছিলেন অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। এ ঘটনায় এলাকায় বিচার হলে তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন। ২০১৮ সালে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে পোস্টার-ব্যানার সাটিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি।