হাওর ডেস্ক::
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালের এদিনে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান উপমহাদেশের বৃহৎ এ ছাত্রসংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে সংগঠনটির নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামে কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছে ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্রসংগঠনটি।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজ দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছাত্রলীগ। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনে নামেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, এগারো দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও ’৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী এ সংগঠনের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয় ও গৌরবোজ্জ্বল।
ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরে জাতীয় রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়িও হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে কাজ করছে ছাত্রলীগ। তবে টানা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকাকালে সম্প্রতি নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেও ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বুয়েটে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে আবরারকে হত্যা করে, এ ধরনের কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই। রাজশাহীতে পলিটেকনিকের অধ্যক্ষকে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে অপমান করল এ ধরনের নেতা আমাদের প্রয়োজন নেই।
চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অব্যাহতি দেয়া হয় সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে।
এরপর থেকে সংগঠনটি চলছে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়ে। তবে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে সে অর্থে গতি ফেরেনি দেশের সবচেয়ে বড় এ ছাত্র সংগঠনটির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে। সারা দেশের বেশিরভাগ সাংগঠনিক ইউনিট এখনও মেয়াদোত্তীর্ণ।
এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হযেছে। এর অংশ হিসেবে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন,৭টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কাটা হবে।
আগামী ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাশে বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হবে। ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতার সামনে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।