বিশেষ প্রতিনিধি::
বজ্রপাত সংগঠনের আবহাওয়াজনিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং বাংলাদেশে বজ্রপাত মোকাবেলায় সহনশীল জনগোষ্ঠী গঠনে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে স্থায়ী জলাশয়ের কারণেই ঘনঘন নবজ্রপাত হয়। এই অঞ্চলে ভূপ্রাকৃতিক কারণে বড় হাওরগুলোর উপস্থিতি বাস্পীভবনের উৎস হিসেবে মেঘের আকার ধারণ করে। এসব কারণেই ঘনঘন বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া জেলার দক্ষিণ পূর্বে ভারতের ত্রিপুড়া অঞ্চলটির অবস্থানের কারণে একটি বিশেষ ফানেলের আকার ধারণ করে মেঘ সৃষ্টি করে বজ্রপাত ঘটাচ্ছে। এতে প্রাণহানি বেড়েই চলছে। এখন সচেতনতার মাধ্যমে বজ্রপাতে হতাহত কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে বলে জানান তারা।
শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় স্কুল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় বজ্রপাতে হতাহত কমাতে জরিপের ভিত্তিতে বিভিন্ন সুপারিশও তুলে ধরা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. তৌহিদা রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কোরবান আলী প্রমুখ।
কর্মশালায় জানানো হয় বজ্রপাতে সহনশীল জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে সরকার সুনামগঞ্জ ও লালমনিরহাটে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দুটি জেলায় বজ্রপাত প্রবণ এলাকার জনগোষ্ঠীর জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বজ্রপাত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জ্ঞানের অভাব, সরকারি উদ্যোগ প্রচারে সীমাবদ্ধতা, ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জ্ঞানের অভাব, মাঠে কর্মরত নানা সংগঠনের সমন্বয়হীনতা, ভবিষ্যত পরিকল্পনার অভাব, স্থানীয় পর্যায়ে তথ্যের অভাব, নিরাপদ অবকাঠামোর অভাবসহ নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে কিভাবে বজ্রপাত সংগঠনের আবহাওয়াজনিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং বাংলাদেশে বজ্রপাত মোকাবেলায় সহনশীল জনগোষ্ঠী গঠনে কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পে কাজ বাস্তবায়ন হলে বজ্রপাতে হতাহত কমবে বলে কর্মশালায় জানানো হয়।