জগন্নাথপুর প্রতিনিধি::
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ থেকে ৫০ বছর আগে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য আলো জ্বালিয়েছিলেন। আর এ অঞ্চলের প্রয়াত জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী শিক্ষার জন্য উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন করে আলো জ্বালিয়েছিলেন। সেই আলোয় বাংলাদেশ এখন আলোকিত। বাংলাদেশের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
‘এসো মিলি প্রাণে প্রাণে শতবর্ষের জয়গানে’ এমন শ্লোগানে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের পাইলগাঁও ব্রজনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎসবে আজ শনিবার বিকেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উৎসবের মূল আকর্ষণ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী উত্তরসূরীদের ভারত থেকে উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান। তারা প্রধান অতিথি এমএ মান্নানের হাতে প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে স্মারক তুলে দেন। প্রধান অতিথিও তাদের পূর্বপুরুষের স্মৃতিময় ভূমিতে হেসে খেলে সময় কাটানো স থাকার অনুরোধ জানান।
শতবর্ষ উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আরো বলেন, আশপাশের অনেক দেশের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন এগিয়ে গেছে। বাঙলাদেশের গড় আয়ু এখন ভারত পকিস্তানের চেয়েও বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি আধুনিক, শিক্ষিত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাঙালিদের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের বাঙালিরা নিরাপদ আছে। বাংলাদেশের অগ্রগতিকে আর কেউ থামাতে পারবে না। তিনি পাইলগাঁও ব্রজনাথ উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাসান শাহারিয়ার প্রয়াত ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর দৌহিত্র বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. অপর্ণা বসু, আইসিএস এর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপংকর বুস, প্রয়াত ব্রজেন্দ্র নায়ারাণ চৌধুরী পৌত্র কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার প্রতাপ নারায়ণ চৌধুরী, স্ত্রী শুক্লা চৌধুরী, প্রয়াত ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী দৌহিত্রী অধ্যাপিকা ভাস্বতী চক্রবর্তী, টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাংবাদিক আশিস চক্রবর্তী, প্রয়াত ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর দৌহিত্রী নগর পরিকল্পনাবিদ মিতালী চৌধুরী, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি সিদ্দিক আহমদ, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহ্ফুজুল আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আকমল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোজাহিদ গনি, উৎসব উদযাপন যুক্তরাজ্য কমিটির সভাপতি প্রবাসী সাংবাদিক মুহিব চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামাল উদ্দিন, উৎসব উদযাপন কমিটির নেতা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মান্না রায়, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সাফরোজ ইসলাম প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ১৯১৯ সালে পাইলগাঁও গ্রামের জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উৎসবে শতাব্দীর আলো নামে একটি সংকলনের প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। রাতে সিলেটের নৃত্যশৈলীর পরিবেশনায় মহাজনের নাও মঞ্চস্থ হয়।পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। উৎসবে সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে নানা স্মৃতিচারণ করেন। এবং ভারত থেকে আগত অতিথিরা তাদের পূর্বপুরুষের বাড়ি ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর পরিরের পক্ষ থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে শুভেচ্ছা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করে।