হাওর ডেস্ক ::
ঢাকার অভিজাত ১৩ ক্লাবসহ সারা দেশে সব ধরনের জুয়া খেলাই নিষিদ্ধ বলে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।
পাশাপাশি দেশের কোথাও ‘জুয়ার উপকরণ’ পাওয়া গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তা জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘জনস্বার্থে’ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবীর করা এক রিট আবেদনে চার বছর আগে হাই কোর্টের জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাই কোর্ট বেঞ্চ সেমবার এই রায় দেয়।
রায়ে বলা হয়, যেসব খেলার ফলাফল দক্ষতার বদলে ‘চান্স’ বা ভাগ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়, সেগুলোই জুয়া খেলা।
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অভিযাত ক্লাবে ইনডোর গেইমের নামে ডাইস ও হাউজি খেলার ‘বেআইনি ব্যবসার আয়োজন’ চ্যালেঞ্জ করে মোহাম্মদ সামিউল হক ও রুকন উদ্দিন মো. ফারুক নামে দুই আইনজীবী ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন।
সেই আবেদনে বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ এবং পাবলিক গ্যাম্বলিং অ্যাক্ট অনুযায়ী টাকার বিনিময়ে ‘ইনডোর গেইম’ খেলা অবৈধ এবং সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হলেও ক্লাবগুলো ওই কাজ করে আসছে।
ওই আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৪ ডিসেম্বর ১৩টি ক্লাবে ‘আইন বহির্ভূতভাবে ও টাকার বিনিময়ে’ হাউজি, ডাইস, তাস ও যে কোনো ধরনের জুয়া খেলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয় বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও শেখ হাসান আরিফের হাই কোর্ট বেঞ্চ।
পাশাপাশি এসব ক্লাবে বেআইনিভাবে হাউজি, কার্ড ও ডাইস খেলার ব্যবসার আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত।
১৩ ক্লাব হলো- ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, ধানমন্ডি ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাংসিনিয়রস ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সিলেট ক্লাব ও খুলনা ক্লাব।
স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম মহানগর, খুলনা মহানগর, সিলেট মহানগরের পুলিশ কমিশনার, র্যাবের মহাপরিচালক, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকদের আদালতের এ আদেশ পালন করতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।
কিন্তু ঢাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষের লিভ টু আপিলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্টের ওই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে হাই কোর্টে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেয়।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাই কোর্ট বেঞ্চে গত ২৩ জানুয়ারি রুল শুনানি শেষে বিষয়টি ২৮ জানুয়ারি রায়ের জন্য রাখা হলেও তা পিছিয়ে যায়।
সোমবার সেই রায়ে রুলটি যথাযথ ঘোষণা করা হলে ক্লাবগুলোতে টাকার বিনিময়ে খেলার আয়োজনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।