ছাতক প্রতিনিধি::ছাতকে ১০ নদী ও দেড়শ বছরের নৌ-বন্দর আজ হুমকির মুখে। ক্রমাগত আগ্রাসনে ১০টি আন্তঃসীমান্ত নদী প্রবাহ থেমে গেছে। ক্রমেই এসব নদী পরিনত হচ্ছে মরা নদীতে।এসব নদী শুকিয়ে এখন শুধুই ধু-ধু বালুচর। নৌযান চলাচল বন্ধ থাকার কারনে প্রায় ২৫ হাজারো শ্রমিক এখন বেকার হয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নদী রক্ষা আন্দোলন এখন গতিহীন। সীমান্তের এপাড়-ওপাড় তীব্র প্রতিবাদের ঝড় আকস্মিক থমকে গেছে। এনজিও সংস্থা পরিবেশবাদী সংগঠনের উদ্দ্যোগে সংগঠিত হওয়া আন্দোলন তছনছ হয়ে গেছে। এখন এসব আন্দোলনে সম্পৃক্তদের কারোরই মুখে ভারতের পানি আগ্রাসনের কথা শোনা যাচ্ছে না। এমন নিরবতা নিয়ে সাধারণ মানুষের নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ছাতক সীমান্তের ইছামতি, সুরমা, চেলা, ধলাই, পিয়াইন,বটের নদীর উৎসস্থল মেঘালয় রাজ্যের ইছামতি উজানে বাধঁ দিয়ে সেচ প্রকল্প তৈরী করেছে ভারতে । এ বাঁধ দেয়ার ইছামতি নদীতে মারাতĄক নৈতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগের মতো নেই, ইছামতি, চেলা, সুরমা, ধলাই, বটে নদী পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি সুরমা, মাসিং, বটের, পিয়াইন নদীতে পানি শুন্যতার কারনে শীত মৌসুমে সেচ মৌসুমে চাষাবাদ চরম হুমকির মুখে পড়েছে। সুরমা, মাসিং, চেলা, ইছামতি, ধলাই, পিয়াইন, বটের নদী ছাড়াও বৃহত্তর ছাতকে অঞ্চলের আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে ১০টি।এ গুলো হচেছ সুরমা, ইছামতি, বটে, চেলা, পিয়াইন, মাকুন্দা, ধলাই ডাউকা, রতśা তেতইখালি ও কচুয়াসহ এ নদী গুলোতে উৎপত্তি মুল মেঘালয়। ছাতক নৌ-বন্দরের দেড়শ বছরের ইতিহাস জড়িত আজ হারিয়ে যাচ্ছে। এসব নদীতে থৈ-থৈ পানি জোয়ার ভাটা নেই, পানি শুন্যতার কারণে নদী গুলো নাব্যতা হারিয়ে এখন মরা নদীতে পরিনত হয়ে গেছে। ১৮৬১ সালে ছাতক ও গোবিন্দগঞ্জকে নৌ-বন্দর হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসব নদী সিলেট, কোম্পানীগঞ্জ, বিশ্বনাথ, সুনামগঞ্জের জগনśাথপুর, দোয়ারা, শেরপুর মৌলভীবাজার ও রাজধানী সহ সারা দেশে নৌ-বন্দর হিসেবে ষ্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, ইঞ্জিন চালিত নৌকা, ডিঙি নৌকা, পালের নৌকা ব্যবহার করে আতĄীয়-স্বজনের বাড়িতে যাওয়া-আসা করা হতো। কিন্তু কালের পরিবর্তে এখন আগের মতো এসব ষ্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, ইঞ্জিন চালিত নৌ-পথ পানি শুন্যতা কারনে হারিয়ে যাচ্ছে। সিলেটের বিশ্বনাথ জগনśাথপুর কালারুকা ইউনিয়নের বেরাজপুর,তকিপুর, আলমপুর ও ˆছলাআফজলাবাদ ইউনিয়নে রামপুর,শিবনগর,শ্রীনগর,নোয়াপাড়া,দিঘলবাক,কৃষনগর,বিনন্দে পুর,বাগইন,বানারশি,হরিষপুর লাকেশ্বর,দোলারবাজার পযন্ত বটের নদী,রতśা নদী ডাউকা নদীতে গিয়ে সুরমা নদী সংযুক্ত হয়েছে। ডাউকা মঈনপুর থেকে ভাতগাঁও ইউনিয়নে জগনśাথপুরে মাসিং নদীতে সংযুত্ত। এক সময় ছোট নৌকা দিয়ে ছাতকে বিভিনś স্থানে নৌ-পথ দিয়ে চলাচল করতো।সুরমা নদীতে বোবরাপুর, মাধবপুর, মুক্তিরগাঁও, কোম্পানীগঞ্জের পারকুল, টুকেরগাঁও, বৌলা, তাতিকোনা, চরেরবন্দ, চেলা , পিয়াইন , ধলাই, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, গনেশপুর, হয়ে বারকাপন, লক্ষীবাউরবাজার, বাউসাবাজার হয়ে সুনামগঞ্জের দোয়ারাতে সংযুক্ত। ইসলামপুর ইউনিয়নে সীমান্ত এলাকা থেকে হাজার-হাজার বারকি শ্রমিক ইছামতি , ধলাই , চেলা , সোনাই , উৎমা, কাটা গাং নদীতে থেকে কার্গো, লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে কোটি-কোটি টাকার পাথর আহরনে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। ভরা মৌসুমে এদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হলেও শীত মৌসুমে শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক ইতিহাস জড়িত এসব নদী গুলোতে। ছাতকে নৌ-বন্দর হিসেবে যুগ-যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নৌ-বন্দর, ষ্টিমার ভবনও রয়েছে। ভারতে আগ্রাসনের কারনে নদী ও খাল, বিল ভরাটে পুরাতন স্মৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে ষ্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, ইঞ্জিন চালিত নৌকা মালামাল পরিবহনে ও যাত্রী যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছাতক মিনি পোষ্টবন্দর ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নদী খননের দাবি কৃষন নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন নদীর বুকে বিশাল চর জেগে উঠার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন নদীতে চর জেগে উঠার কারনে বর্ষ মৌসুমে তার বিদ্যালয় নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। বহুকাল ধরে নদী খনন করা হয়নি। সাবেক মেম্বার আকিল উদ্দিন,শিক্ষক সেলিম আহমদ, ক্বারি হাফিজ মাহবুর রহমান ও শাহাবুদ্দীন খানসহ এলাকার লোকজন জানান নোয়াপাড়া এলাকায় বটের নদী শুকিয়ে নদীর বুক বিশাল বালুচর দেখা দেয়ার ফলে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে প্রায় দু’মাস ধরেই। এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই নদী খননের কোন উদ্দ্যোগ নেয়া হয়নি সরকারে। নদী এখন পুরোপুরি মরা খালে পরিনত হচ্ছে।এক সময় এসব নদী দিয়ে একের পর এক সারি-সারি নৌকার চলাচল চোঁখে পড়লে ও আজ ও সেই চিত্রটি দেখা মিলচ্ছে না। জলবায়ুর প্রতিত্রিুয়া ত্রুমান্বয়ে নদী ভৌগলিক মানচিত্র থেকে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।নদী নৈস্বসির্ক পরিবেশ অস্তিত্ব আজ বিলীন ও নদী ও মানুষের সেই চিরচেনা যে দিনদিন পাল্টে যা্েচ্ছ। শুষ্ক মৌসুমে পানি স্বল্পতার কারনে নদীতে মাছের আকাল দেখা দেয়।