হাওর ডেস্ক::
দিল্লির সাম্প্রদায়িক হামলাকে ভারতের করোনাভাইরাস বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট অরুন্ধতী রায়। তিনি বলেন, ‘আমরা অসুস্থ’।
দ্য স্ক্রল জানায়, রবিবার দিল্লির যন্তর মন্তরে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এক জমায়েতে বক্তব্যে দেন অরুন্ধতী।
তিনি বলেন, ‘আজকে এমন জায়গায় আমরা একত্রিত হয়েছি, যেখান থেকে বাসযাত্রায় অল্প সময়ের দূরত্বে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে চার দিন আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্যে উন্মত্ত হয়ে ফ্যাসিবাদী জনতা পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতা ও সমর্থনে মুসলিমদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়।’
ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের সার্বক্ষণিক সমর্থন এবং আদালতের থেকে কোনো বাধা আসবে না এমন বিশ্বাস থেকে উন্মত্ত জনতা উত্তর-পূর্ব দিল্লির কর্মজীবী মুসলিমদের এলাকাগুলোতে হামলে পড়ে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘মার্কেট, দোকান, ঘরবাড়ি, মসজিদ, গাড়ি সবকিছু পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রাস্তাগুলো পাথর আর ধ্বংসাবশেষে পূর্ণ। মর্গগুলো মৃতদেহে ভর্তি। যেখানে মুসলিম ও হিন্দু দুই সম্প্রদায়ের মানুষই আছে, একজন পুলিশকর্মী এবং গোয়েন্দা সংস্থা তরুণ কর্মীও রয়েছেন। এমন ভয়াবহ বর্বরতার মধ্যেও অবিশ্বাস্য সাহস এবং দয়া প্রদর্শনে সক্ষম হয়ে উঠেছে দুই পক্ষের মানুষের মধ্যে।’
তিনি বলেন, ‘তবে এটা কোনোভাবে অস্বীকার করা যাবে না যে, এই হামলা করেছে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয়া লুম্পেন জনতা, যাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এই মুহূর্তের নগ্ন ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র। এই স্লোগানের কারণে ঘটনাটিকে হিন্দু-মুসলিমের দাঙ্গা বলে মানুষ চিহ্নিত করতে চায় না। এটি ফ্যাসিবাদ এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী মধ্যকার চলমান যুদ্ধের বহিঃপ্রকাশ। যেখানে ফ্যাসিবাদীদের প্রথম শত্রুই হচ্ছে মুসলিমেরা।’
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক হামলায় নিহত বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত দুই শতাধিক, যাদের মধ্যে ৭০ জনই গুলিবিদ্ধ।
বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বিক্ষোভ বন্ধে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টা পর রবিবার রাজধানী দিল্লিতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ-বিরোধী মুসলিমদের ওপর সশস্ত্র হামলা শুরু করে আইনটির সমর্থকরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ‘হিন্দুয়োঁ কা হিন্দুস্তান’, ‘জয় শ্রীরাম’- এসব স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে দেখা যায়। কোথাও আবার নিজ হাতে সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙেছে পুলিশ।