সাইফ উল্লাহ:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় আইন লঙ্ঘন করে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে মনাই নদী প্রকাশিত সুনই গ্রুপ ফিশারি জলমহাল সেচে মাছ ধরা হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে ওই জলমহালের ইজারাদার এভাবে মাছ ধরছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, জেলা প্রশাসনের অধীন উপজেলার মনাই নদী প্রকাশিত সুনই গ্রুপ ফিশারি জলমহালটি বাংলা ১৪২২ থেকে ১৪২৭ সন পর্যন্ত বার্ষিক ২০ লাখ ২০ হাজার পাঁচ শত ৫০ টাকায় ইজারা নেয় মনাই নদী প্রকাশিত সুনই নদী সুনই মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি শ্রী চন্দন চন্দ বর্মন। ইজারার নীতিমালা অনুযায়ী জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ শিকার সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। কিন্তু এই আইনের তোয়াক্কা না করেই সেখানে মাছ শিকার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ, মনাই নদী প্রকাশিত সুনই গ্রুপ ফিশারি আওতাধীন মনাই নদী, আসোয়া বিল সুনই দাইর, দিগা বিল, হিলোর বিলে গত প্রায় ১০-থেকে ১১ দিন ধরে ওই জলমহালে চার শ্যালো ইঞ্জিন বসিয়ে ইজারাদারের নির্দেশে তাঁর নিয়োজিত লোকজন জলমহাল শুকিয়ে মাছ শিকার শুরু করেন। শুক্রবার মাছ ধরা শেষ হয়।
বিষয়টি এলাকাবাসী একাধিকবার জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে জানালেও তিনি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননী।
উপজেলার মনাই নদী প্রকাশিত সুনই নদী জলমহালের আওয়তাধীন আসোয়া নামক বিলটি শ্যালো মেশিন দিয়ে শুকিয়ে লোকজন নিয়ে মাছ ধরারত আবস্থায় পাওয়া যায় ওই জলমহালের সাব ইজারাদার উপজেলার বৈখইজুড়া গ্রামের তৌয়হিদ মিয়া। এ সময় তাকে এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হলে তিনি এক পর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনি আমাকে এত প্রশ্ন করছেন কেন? আমি বিলটি সাব লিজে নিয়েছি আর ইজারাদার বলে দিয়েছে বিলটি শুকিয়ে মাছ ধরার জন্য তাই আমি শ্যালো মেশিন দিয়ে জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরছি। আর এতে আমার কোনো দোষ নেই। যা প্রশ্ন করার প্রয়োজন মূল ইজাদার মনিন্দ্র বর্মনকে গিয়ে করেন?
জলমহালের ইজারাদার মনিন্দ্র বর্মন ও শ্রী চন্দন চন্দ্র বর্মন দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে জলমহাল শুকিয়ে মাছ শিকারের অভিযোগটি সঠিক নয়। কে বা কারা এই জলমহাল শুকিয়ে মাছ শিকার করেছে, সে সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সালমুন হাসান বিপ্লব বলেন, এই জলমহালের তলা শুকিয়ে মাছ শিকারের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বিধিমোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, শ্যালো মেশিন দিয়ে জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। ইতি মধ্য বেশ কয়েটা জলমহালে শ্যালো মেশিন বন্ধ করা হয়েছে এবং এক ইজাদারের কাছ থেকে মুচলেকা রাখা হয়েছে। আর যে সব জলমহাল শুকিয়ে যারা মাছ ধরছে তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবেনা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ – সংক্রান্ত কিছু অভিযোগ আমি পেয়েছি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলে দিব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, জলমহালে শ্যালো মেশিন বসিয়ে মাছ শিকার করা বেআইনি। জলমহাল শুকিয়ে যাতে কেউ মাছ শিকার করতে না পারে তার জন্য ইউএনও সাবকে বলে দিব জলমহাল নীতিমালা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।