সাজ্জাদ হোসেন শাহ্:
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে বসেই প্রাইভেট রোগী দেখে ৩০০ টাকা ফি নেয়ায়ার অভিযোগে ডা. নিলুফা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছেন, সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ৩৯ তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. নিলুফার ইয়াসমিন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নবনির্মিত নতুন ভবনে রয়েছে তার রোগী দেখার চেম্বার। তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় তার চেম্বারের পিছনের দেয়ালে সাঁটানো রয়েছে ডা. নিলুফার ইয়াসমিন, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোন প্রাইভেট রোগী দেখা হয় না। প্রাইভেট রোগীর ভিজিট ৩০০ (তিনশত টাকা)। হাসপাতালের গেইটে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলাবলি করছেন, সরকারি হাসপাতালের ভিতরে ডাক্তারের কক্ষে ৩০০ টাকা রোগী দেখার ফি আমরা কোথাও দেখিনি।
ডা. নিলুফার ইয়াসমিন বলেন, আমি তাহিরপুর আসার পর থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালে বসে কোন রোগীর কাছ থেকে কোন প্রকার ফি নেইনি। আমি এখানে এসে অনেক অনিয়ম লক্ষ করেছি। আমি চেয়েছিলাম এই অনিয়মগুলিকে নিয়মের ভিতরে এনে এখানকার স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে, কিন্তু একটি কুচক্রি মহল আমার প্রতি ইশর্^ান্নিত হয়ে আমার কাজকে বাধাগ্রস্থ করতেই এই বিষয়টি নিয়ে একটি অপপ্রচার চালিয়ে আমি ও আমার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে ভিভ্রান্ত করছে।
তাহিরপুর সদর ইউপির ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মতি বলেন, হাওর বেষ্টিত অবহেলিত ভাটির জনপদ, শিক্ষা, দিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আজ পর্যন্ত কেউ এভাবে নোটিশ সাঁটিয়ে হাসপাতালে রোগী দেখার ফি আদায় করতে দেখিনি। আমি নোটিশটি দেখে ডা. নিলুফার ইয়াসমিনকে প্রশ্ন করেছিলাম যে, এইভাবে আপনী হাসপাতালে বসে রোগী দেখে ফি নিতে পারেন না, ফি নিয়ে রোগী দেখলে হাসপাতালের বাইরে চেম্বার খুলে দেখেন। এসময় ডা. নিলুফা ইয়াসমিন আমাকে কোন সদোত্তর না দিতে পারলেও তার স্বামী ফয়সল আহমেদ আমাকে বলেন, এইটা নাকি আইনে আছে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএফপিও ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, আমি গত কয়েকদিন ধরে বাইরে আছি, বিষয়টি শুনে আমি ডা. নিলুফাকে সর্তক করে বলেছি এরপর যদি তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের ভিতরে কোন প্রাইভেট রোগী দেখে ফি নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. শামস উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আশরাফুল হককে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদেরকে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।