বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সাড়ে পাঁচ বছরের শিশু তুহিন মিয়া হত্যার আলোচিত ঘটনায় বাবা আব্দুল বাছির ও চাচা নাসির মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর দুই চাচাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১০ মার্চ আরেক অভিযুক্ত শিশুর চাচাতো ভাই শাহরিয়ারকে আট বছরের আটকাদেশ দিয়েছিলেন শিশু আদালত। আজ ১৬ মার্চ সোমবার সকালে বাবা ও চাচার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
প্রতিপক্ষকে ফাসাতে গত ১৩ অক্টোবর ঘুম থেকে তুলে নিয়ে শিশু তুহিনকে হত্যা করে জবাই করে কান ও লিঙ্গ কেটে পেটে দুটি ছুরিবিদ্ধ করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। নৃশংস এ ঘটনায় দেশ বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছিল। আলোচিত এই মামলায় ৫ মাসের মধ্যেই বিচারকাজ শেষ করেছেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সনের ১৩ অক্টোবর গভীর রাতে দিরাই উপজেলার কেজাউড়া গ্রামের বসতঘর থেকে তুলে নিয়ে ঘুমন্ত শিশু তুহিন মিয়াকে জবাই করে তার লিঙ্গ, দুই কান কেটে পেটে দুটি ছুরি বিদ্ধ করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়। ঘটনার দুই দিন পর চাচাতো ভাই শাহরিয়ার আহমদ ও তার দুই চাচা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আদালতে ৬৪ ধারার জবানবন্দীতে স্বীকার করেন। তবে বাবা আব্দুল বাছির ও চাচা মাওলানা আব্দুল মোছাব্বির তুহিন হত্যার কথা স্বীকার করেননি। পিতা আব্দুল বাছিরকে দুই দফা রিমাণ্ডে নিলেও তিনি ছেলে হত্যার সম্পৃক্ততা স্বীকার করেননি।
মামলায় বাবা আব্দুল বাছির, চাচা জমসেদ, নাছির, মাওলানা মোছাব্বির ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে গত ৩০ ডিসেম্বর আদালতে আলাদাভাজে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। অভিযুক্ত চাচাতো ভাই শাহরিয়ারের বয়স কম হওয়ায় তাকে বিচারের জন্য শিশু আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। গত ২ জানুয়ারি শাহিরয়ারের বিরুদ্ধে আদালত চার্জ গঠন করেন। গত ৩ মার্চ আদালত যুক্তিতর্ক শোনানী শেষে ১০ মার্চ মঙ্গলবার সকালে তুহিন হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শিশু চাচাতো ভাই শাহরিয়ার আহমদকে ৮ বছরের আটকাদেশ দেন শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন। আজ ১৬ মার্চ সকাল ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার শিশু তুহিন হত্যায় বাবা আব্দুল বাছির ও চাচা নাসির মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন। কারাগারে আটক অপর দুই চাচা জমসেদ ও মোছাব্বিরকে খালাস দিয়েছেন আদালত।