ছাতক প্রতিনিধিঃ
গত ক’দিনে ছাতকে সাড়ে ৫শ প্রবাসী দেশে ফিরলেও কেউই নেই হোম কোয়ারেন্টাইনে (নিঃসঙ্গ অবস্থান)। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বারবার প্রবাসীদের ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে থাকার কথা বলা হলেও কেউই প্রশাসনের নির্দেশ মানছেন না। ফলে উপজেলা জুড়ে সীমাহীন আতংক দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নজরধারী বাড়ানোর পর গত দু’দিন থেকে প্রবাসীরা দেশে এসেই তাদের আগমনের বিষয়টি গোপন রাখছেন। তারা মানছেন না সরকারী কোন নির্দেশনা। অথচ দেশে ফেরার পূর্বে প্রবাসের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নিকট তারা লিখিত অঙ্গিকার করছিলেন দেশে ফিরেই স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। কিন্ত বাড়ি পৌঁছেই তারা ভঙ্গ করছেন ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের নিকট দেয়া সেই প্রতিশ্রুতি।
সরকারী সুত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিনে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ মধ্যপ্রাচ্য সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ৫৫৪ জন প্রবাসী দেশে এসেছেন। কিন্তু তারা দেশে পৌঁছার খবর এলাকায় গোপন রাখছেন। আবার অনেকেই সিলেট শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছেন। ইমিগ্রেশন সুত্র অনুযায়ী গত ১২ দিনে ছাতকে ৫৫৪ জন প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। ব্যাপক প্রচারনা স্বত্বেও প্রবাসীরা মানছেন না সরকারী নির্দেশনা। ভঙ্গ করছেন দেশে ফেরার সময় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রবাস ফেরত কেউ দেশে এলে দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগে জানানোর আহবান জানিয়েছেন। করোনা ভাইরাস বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গনসচেতনতা মূলক প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে ছাতক শহরের ট্রাফিক পয়েন্টসহ বিভিন্ন পয়েন্টে গনসচেতনতা মূলক প্রচারণা করা হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবির, সহকারী পুলিশ সুপার (ছাতক সার্কেল) বিল্লাল হোসেন, ছাতক থানার ওসি মোস্তফা কামাল, টি এইচও ডাক্তার রাজিব চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার রায়হান আহমদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কে এম মাহবুব রহমানসহ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। হ্যান্ড মাইকে প্রচারণাকালে কর্মকর্তাবৃন্দ বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য যেকোন ধরনের লোক সমাগম থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে। হ্যান্ডসেক, কোলাকোলি না করাসহ অ-প্রয়োজনে ঘরের বাহির না হওয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়। কোন প্রবাসী লোক দেশে এসে তাকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে জানানো হয়। বুধবার সন্ধা পর্যন্ত উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ, হাসনাবাদ, জাউয়াবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ও পয়েন্টে করোনা ভাইরাস বিষয়ক গনসচেতনতা মূলক প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে সৌদিআরব থেকে আসা প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে হাসনাবাদ বাজারে ঘোরাফেরা করায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. গোলাম কবির। এবং তাকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। গিয়াস উদ্দিন কালারুকা ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মঈনুল ইসলামের পুত্র।