বিএনপি-জামাতি আমলের চেয়েও বর্তমানে ধর্মান্ধ মানুষ বেশি। এর কারণ কী? আসুন তলিয়ে দেখা যাক। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন। নাম এক হলেও কর্মপদ্ধতি বা অর্থনৈতিক পদ্ধতি এক নয়।
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পর চীন ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত শুধু সমাজ সংস্কারেই মনোনিবেশ করেছিল। মানুষকে ঠিক করেছিল, তাদের চিন্তাভাবনা বদলে দিয়েছিল। ১৯৭৮ সাল থেকেই অর্থনৈতিক সংস্কারে মনোযোগ দেয়। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে মানুষের মনোজগতে তারা পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরে আওয়ামিলীগ দৃশ্যমান অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটালেও সমাজ পরিবর্তনে বা সংস্কারে দৃশ্যমান কিছুই করেনি। বরং হেফাজতে ইসলামের সাথে সুর মিলিয়ে দেশের র্যাডিকালাইজেশনে ভূমিকা রেখেছে। ফলাফল দেশে ধর্মান্ধদের হার জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের এই সময়ে এদের সচেতন করেও লাভ হবেনা কারণ তারা অন্ধ বিশ্বাসে নিজের মগজ বন্ধক দিয়ে বসে আছে। অথচ তারা জানলোই না সৃষ্টিকর্তা প্রাণিজগতে তাদের কত চমৎকার একখানা ব্রেইন দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল অসাম্প্রদায়িক এবং সেক্যুলার সমাজ নির্মাণ। বঙ্গবন্ধুর ‘আমার দেখা নয়াচীন’ পড়লে দেখা যায় তাঁর চিন্তা কত উন্নত ছিল। /নয়াচীন থেকে ঘুরে এসে আমার এই মনে হয়েছে যে, জাতির আমূল পরিবর্তন না হলে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করা কষ্টকর। নতুন করে সবকিছু ঢেলে সাজাতে হবে। ভাঙা দালানে চুনকাম করে কোনো লাভ হয়না- বেশি দিন টিকে না। আবার ভেঙে পড়ে। পুরান দালান ভেঙে ফেলে দিয়ে নতুন করে গড়ে তুললে, ঘুণ ধরতে বা ভেঙে পড়তে অনেক সময় লাগে। সাথে সাথে ভিত্তিটা মজবুত হয়। ভিত্তি মজবুত না হলে সামান্য বাতাসে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই, নয়াচীনে দেখেছি তারা ভিত্তি মজবুত করে কাজ শুরু করেছে/ আর আমরা সিস্টেম তৈরি করছি কিন্তু যারা সিস্টেম চালাবে বা সিস্টেমে চলবে তাদের উন্নয়নে কিছুই করিনি। এদিক দিয়ে আওয়ামিলীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।