জগন্নাথপুর প্রতিনিধি::
সিলেটে শামসুদ্দিন হাসপাতালে করোনাভাইরাস সন্দেহে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ষাটোর্ধ নারীর আইসোলেশনে মৃত্যুর আগে সুস্থ অবস্থায় স্বামীসহ গ্রামের বাড়ি জগন্নাথপুরের সাতহাল গ্রামে ছিলেন। সেখান থেকেই তিনি অসুস্থ অনুভব করলে সিলেট বাসায় চলে আসেন। পরে তিনি সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিকে এই খবরে ওই নারীর গ্রামের লোকজনের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা ওই বাড়িটি কিছুদিনের জন্য লকডাউন করার আহ্বান জানিয়েছেন। রবিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাড়িটি পরিদর্শন করেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই বাড়ির সবাইকে আগামী ১৪ দিন কঠোরভাবে হোমকোয়ারেন্টাইন মেনে চলা নির্দেশনা দিয়েছেন। এর ব্যত্যয় করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে বলে তাদেরকে সতর্ক করে এসেছেন।
শনিবার গভীর রাতে গত ৪ মার্চ দেশে আসা ওই নারী মারা যান। স্বজনরা মারা যাবার খবর শুনে সাতহাল গ্রামের বাড়িতে কবর খোরা শুরু করেন ও শিরনি বিতরণের উদ্যোগ নেন। এই খবর পেয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসের স্বাস্থ্য পরিদর্শক আসকর আলীর নেতৃত্বে একটি টিম সকালেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। তারা স্বজনদের কবর খোরা ও শিরনি বিতরন অনুষ্ঠান থেকে বিরত রাখেন। বিকেলে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন ওই নারী স্বামীসহ প্রথমে বাড়িতে ছিলেন। তবে পরিবারের লোকজন বিষয়টি স্বীকার করেননি। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এলাকাবাসীর আহ্বানের প্রেক্ষিতে ওই নারীর বাড়ির সকল স্বজনদের একটানা ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এই নির্দেশনা অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সাতহাল গ্রামের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন ফারুক বলেন, গ্রামের মানুষ আমাকে বলেছেন ওই নারী স্বামীসহ কয়েকদিন বাড়িতে ছিলেন। পরে তিনি সিলেট চলে যান। এখন তিনি মারা যাবার পর গ্রামের মানুষজন ভয়ে আছেন। তারা ওই বাড়িটি লকডাউন করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গ্রামবাসীর অনুরোধের প্রেক্ষিতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ির সবাইকে আগামী ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে গেছেন।
নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত বলেন, ওই নারীর স্বজনরা বলেছেন তিনি বাড়িতে আসেননি। তবে এলাকাবাসী বলেছেন। এ কারণে আমরা তার বাসার সকলকে আগামী ১৪ দিন বাধ্যতামূলক হোমকোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়ে এসেছি।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৫ জন বিদেশফেরত নাগরিককে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট ২৩২জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। তবে গত গত ৩ মার্চ থেকে জেলায় প্রায় ৪ হাজার প্রবাসী সুনামগঞ্জে প্রবেশ করেছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।