(করোনার গৃহবন্ধিত্বের দিনগুলোতে এন্ড্রয়েডে সময়ের নোট লিখছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি পীর মিসবাহ। সেখানে জীবনের নানা প্রসঙ্গ আসছে স্মৃতিকাতর রূপে। রাষ্ট্র সরকার ও সমাজের নানা দিকও। আড্ডাবাজ এই মানুষ করোনাভাইরাসে অসহায় মানুষের নিয়েও উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত আড্ডা ও আনন্দের স্থানগুলো এবং মানুষকেও ভীষণ মিস করছেন। আজকের এমনই একটি অখন্ড সময়ের খন্ডিত স্মৃতিকাতর ভাবনা তুলে ধরা হলো হাওর টুয়েন্টিফোরডটনেটের জন।)
বাইরের প্রকৃতি খুব সুন্দর। রোদঝলমল।দিনরাত বাতাস।হঠাৎ হু হু করে বাতাস অাসে। পরে থাকা পাতা উড়িয়ে নিয়ে যায়। পাতারা শব্দ করে।সুনসান নিরব শহরে বাতাসে পাতার শব্দ স্পস্ট হয়।কানে অাসে অালাদা করে।সময়টা বসন্ত।হু হু বাতাসের সাথে মনটা হু হু করে উঠে।ঘরে বসে থাকতে চায়না।বাইরে যেতে চায়।সময়টাও বসন্ত।অামরা হাওরের মানুষ। সুনামগঞ্জের মানুষ। অাড্ডা হল অামাদের জীবনের মুল অানন্দ।টাকা পয়সা।বিত্ত-ভৈবব। জৌলুসের জীবন অামাদের টানেনা।অাড্ডাই মুল।বৃদ্ব-যুবক অাড্ডাই সবার প্রাণ।খাবার কম হলেও অসুবিধা নেই। চা সিঙ্গারার সাথে অাড্ডা হলেই জীবন সুন্দর।
শহরের হোসেন বখত চত্বর, কাজীর পয়েন্ট, উকিলপাড়া, ট্রাফিক পয়েন্টে তারা মিয়ার ছোলা -পিয়াজু,রিভার ভিউএর কফির সাথে তরুনদের লুকিয়ে ধুমপান সবাইকে টানে।টানে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের নুরানীর সামনের অাড্ডা।ডাচ-বাংলার পেছনের অাড্ডা।টানে পৌর বিপনীর মধ্যবিত্ত।চা এর দোকান।ফুটপাতের মুড়ি।
সব শুন্য।কোথাও কেউ নেই।
পৃথিবীর মানুষের মত অামরা সবাই গৃহ বন্ধীত্বে।
জীবন বাঁচানোর লড়াই এ।
কিছু করার নাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের পর এখন সবচে অসহায় সময় পার করছে ম
মানুষ।ভয়াবহ মহামারীতে মানুষ। বিশ্বে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে।অাক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।ঠেকানো যাচ্ছেনা।গৃহকোনে লুকিয়ে থেকে ভাল থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন সবাই।স্বাস্থ্য বিধি মানতেই হবে।বের হওয়া যাবেনা।হাত ধুতেই হবে।পরিস্কার থাকতে হবে।বেঁচে থাকার চেস্টা হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।অসামাজিক হতে হবে। মেলামেশা করা যাবেনা।বিত্তবানরা সাহায্য করুন অসচ্ছল মানুষদের।এমন বিপদে সবাই এক।ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লসের পর সে দেশের প্রধানমন্ত্রীও অাক্রান্ত।ধনী -দরীদ্র কেউ রেহাই পাচ্ছেননা।সবাই এক অবস্থায়।
হাওরের রাজধানী নুনামগঞ্জের মানুষেরা সারাজীবন অাড্ডায় প্রাণ খুজেছি।বসন্তের প্রকৃতি অারো বেশী অাড্ডায় টানে। ঘরে থাকতে মন চায়না।মন বিদ্রোহ করে।শান্ত থাকুন।ধৈর্য্য ধরুন।বেঁচে থাকলে অাবারো অামরা দল বেধে অাড্ডায় মেতে উঠব। এখন না।ঘরে থাকেন।সতর্ক থেকে মানুষের পাশে দাড়ান। কোন রাজনৈতিক সংকীর্নতা না।প্রতিযোগীতা না।শুধুই ভালবাসা। নিজের জন্য। সবার জন্য।বিপদ কেটে গেলে অাড্ডায় অাড্ডায় মুখরিত হবে হাওরের জনপদ।অাপাতত বই এর শুকনো পাতায় থাবুক বসন্ত।শুধু জানালা দিয়ে যতদুর…
“চারিপাশে বনের বিস্ময়,
চৈত্রের বাতাস,
জ্যোৎস্নার শরীরের স্বাদ যেন,”
ভাল থাকুক প্রিয় সুনামগঞ্জ।প্রিয় স্বদেশ।বিশ্বের মানুষেরা।
২৭.০৩.২০