1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

আর নয় অন্ধকারে, চলো এবার আলোতে

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০, ১২.৫৪ পিএম
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে

জনি বেগম ::
পৃথিবীতে আলো-অন্ধকার, সুখ-দুঃখ পাশাপাশি অবস্থান করে এবং এগুলো নিয়েই মানবজীবন। অন্ধকারের বিপরীতে যেমন রয়েছে আলো তেমনি দুঃখের বিপরীতেও সুখ অবস্থান করে। সুখ এবং দুঃখ শব্দ দুটি ছোট্ট হলেও এর অনুভূতি গুলো পরিমাপ করা যায় না যা উপলব্ধি করার বিষয়। কিন্তু বর্তমানে আপনি সুখে আছেন না দুঃখের সাগরে ডুবে আছেন তা নির্ভর করে আপনার অতীতের কর্মফলের উপর এবং ভবিষ্যতে আপনার জীবন কোনদিকে অতিবাহিত হবে তা নির্ভর করে আপনার বর্তমানের ভাবনা এবং কাজের উপর৷ কেননা, সঠিক কিছু আশা করার আগে আমাদেরকে প্রথমে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে হবে। কিন্তু এখন যে আপনার জীবন অন্ধকারের কালো ছায়া দ্বারা আবদ্ধ আছে সেটা কি একবারও ভেবে দেখেছেন আপনার জীবনে এতো অন্ধকারের মূল উৎস কী? পৃথিবীতে এতো আলো থাকতে কেন আপনার জীবন আলোবিহীন? কখনও কি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখেছেন নাকি কখনও খোঁজার চেষ্টাই করেন নি!
আচ্ছা, চলুন আজকে আমরা জেনে নিবো কেন আমাদের জীবনে আলোর চেয়ে অন্ধকার বেশি বিদ্যমান থাকে…!

আমাদের জীবনে তিনটি কাল রয়েছে৷ অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। অতীত আমাদেরকে কষ্ট দিবে বর্তমান সবসময় আমাদের সাথে থাকবে এবং ভবিষ্যৎ আমাদেরকে আশা দেখাবে এটাই নিয়ম৷ কিন্তু এই তিন কালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ কাল হচ্ছে “অতীতকাল”। যার ফল আমরা বর্তমানে উপলব্ধি করি। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে একটি অতীতকাল। পার্থক্যটা শুধু কারো অতীত সুখময় আবার কারো অতীত দুঃখময়। আমার আজকের লেখাটা শুধু সেইসব লোকদের জন্য যাদের অতীতে কিছু স্বল্প সময় ছিল কালো অন্ধকারের ছায়ায় ডাকা। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সেই অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর জগতে ফিরে আসতে না পারার ব্যর্থতা৷ আলো আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে কিন্তু সেই ডাক শুনতে পেয়েও আমরা সাড়া দিতে পারছি না৷
কিন্তু কেন……..?
কারণ আমাদের অনেকের জীবনেই সম্পর্কের একটা সুন্দর সময় পার করার পর কিছু কিছু মানুষের চলে যাওয়াকে আমরা সহজে মেনে নিতে পারি না। তাদেরকে ভুলতে চাইলেও মনের অজান্তেই তারা রয়ে যায় আমাদের হৃদয় জুড়ে। হৃদয়ের আষ্টেপৃষ্টে মিশে থাকে৷ কিছু কিছু মানুষের চলে যাওয়া জীবনের জন্য একটা বড় আশীর্বাদ হলেও সেটাকে আমার অভিশাপ বলে মেনে নেই। আমরা বারবার সেই মানুষগুলো কথা ভেবে জীবনের অনেক মূল্যবান সময়গুলো নষ্ট করে ফেলি। ভুলতে গিয়েও ভুলতে পারি না। যদিও তারা আমাদের জীবনে এতটুকু গুরুত্বপূর্ণ নাহ্ তবুও তাদেরকে আমরা নিজের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে বসি। আর দুই আনার মানুষকে চার আনার দাম দিলে সে তো দশ আনার ভাব নিবেই, আর এটাই স্বাভাবিক। আর এটাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হয়ে দাঁড়ায়। তারজন্য আমরা সবসময় নিজেদের অপরাধী মনে করি। নিজের অজান্তেই নিজেদেরকে নানাভাবে নানারূপেে শাস্তি দেই। অন্ধকার জগতে ঠেলে দেই আমাদের জীবনটাকে। নিজের হাতেই শেষ করে দিতে চাই নিজের স্বর্ণালী জীবনটা৷ ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পিছনে ফেলে আসা স্মৃতিকে এড়িয়ে সামনে যেতে পারি না। ভালো জিনিসগুলো ত্যাগ করে মন্দটাকে সাদরে গ্রহণ করে নেই।
ইত্যাদি হাজারো অন্যায় কাজ করছেন বর্তমানের যুবক-যুবতীরা। আবেগের বশবতী হয়ে দিশেহারা হয়ে গেছেন। সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো এখন তাদের কাছে বড্ড বেমানান। এমনকি অনেকে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবার মতো ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আত্মহত্যার মতো পাপকাজে পা দিতেও দ্বিধাবোধ করছেন না।

কিন্তু কেন এতো হানাহানি কেন এতো রাহাজানি। একবারও কি ভেবে দেখেছেন আজ আপনি যা করছেন তা আদৌ সঠিক নাকি ভুল। নাহ্! ভেবে দেখেননি। কারণ আপনি আজও ঐ মানুষটাকে ভুলতে পারছেন না। তার চলে যাওয়াকে সহজে মানতে পারছেন না৷ আপনি এখনও মনে করেন আপনিই ঠিক ছিলেন কিংবা এতো কিছুর পরেও আপনি আরেকটু কষ্ট করলে হয়তো বা সম্পর্কটা টিকে যেতো। ইত্যাদি হাজারো বাক্যের সন্ধিতে আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু মনের মতো করে বাক্য মেলাতে পারছেন না বলে প্রতিনিয়ত নিজেকে অপরাধী ভেবে শাস্তি দিচ্ছেন। সেই সাথে শাস্তি দিচ্ছেন আপনার (আসল ভালোবাসার মানুষ) বাবা-মা এবং আপনার পরিবারকে।
আচ্ছা, আপনি ক্ষণিকের একজন মানুষের ভালোবাসার মূল্য দিতে গিয়ে নিজের জীবনকে শেষ করে দিচ্ছেন। কিন্তু যারা আপনাকে সত্যিকারে ভালোবাসে (আপনার পরিবার) তাদের ভালোবাসার মূল্য দিতে আপনি কি করবেন?? নিজের জীবনতো অন্যের চলে যাওয়ার পিছনে দিয়ে দিচ্ছেন তাহলে বাবা-মার জন্য অবশিষ্ট কি বাকী রাখলেন?? এই প্রশ্নটা আমার রইল সেইসব সচেতন সন্তানদের কাছে
যারা নিজের বাবা-মাকে খুব যত্ন সহকারে গুছিয়ে কষ্ট দিচ্ছেন!
মনে রাখবেন পৃথিবীতে বাবা-মা এমন এক আশ্রয় সংস্থা যার তুলনা পৃথিবীর কোনো বাটখারায় পরিমাপ করা যায় না৷ যায় না সেই পরম স্নেহের ওজন দেয়া কোনো ওয়েট মেশিনে। সুতরাং এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আপনার কারণে আপনার বাবা-মার চোখে জল আসে। মনে রাখবেন একদিন আপনিও কোনো না কোনো সন্তানের জনক-জননী হবেন৷ তাই এমন কোনো অপরাধ করবেন না যার ফল ভোগ করতে হবে আপনার বাবা-মাকে। সময় থাকতে নিজেকে শুধরে নিন এবং সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষদের কাছে ফিরে আসুন। দেখুন আপনাকে নিয়ে তারা অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখেছেন যেখানে আপনার দেখা স্বপ্নগুলো হয়তো অনেক তুচ্ছ মনে হবে। এদের দিকে একটু নজর দিন দেখবেন এই ভালোবাসার মানুষগুলো আপনার সাথে কোনদিনই প্রতারনা করবে নাহ্।

এবার আপনাকে বলি কিভাবে আপনার অতীতে হারিয়ে যাওয়া মানুষকে ভুলতে পারবেন। দেখুন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কিছু নির্মম বাস্তবতা আছে যা শত কঠিন হলেও আমাদেরকে মেনে নিতে হয়৷ যদিও কেউ ইচ্ছে করে কারো সাথে প্রতারণা করে না সময় ও পরিস্থিতি মানুষকে এমন এক জায়গায় এনে দাঁড় করায় তখন মানুষ বাধ্য হয়ে প্রতারণা করে কিংবা বদলে যায়। আপনি একবার ঐ চলে যাওয়া মানুষটির জায়গায় নিজেকে দাঁড় করিয়ে ভেবে দেখুনতো তার জায়গায় থাকলে আপনি কি করতেন? এই প্রশ্নটা আপনি আপনার বিবেককে করুন নিশ্চয়ই উত্তরটা পেয়ে যাবেন। হয়তো সে যে কাজটা করেছে তার জায়গায় থাকলে আপনিও সেই কাজটাই করতেন৷ হয়তো আপনিই ভুল ছিলেন। তাহলে কেন এই সহজ সরল বিষয়টা মেনে নিতে পারছেন না৷ কেন কঠিন সূত্রজালে নিজেকে বন্দী করে রাখছেন? কেন সেই মানুষটিকে ক্ষমা করে নিজেকে মুক্তি দিচ্ছেন না! তার ক্ষমা পাওয়াটা যতটা না প্রয়োজন, আপনার ক্ষমা করে দেওয়াটা এরচেয়েও বেশি প্রয়োজন। কারণ, ক্ষমা করা মাত্রই আপনি আপনার অতীতের শিকল থেকে মুক্ত হচ্ছেন। সো,, ক্ষমা করে দিন তাকে এবং নিজেকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনুন।

অবশেষে একটি কথাই বলবো, অতীতের দুশ্চিন্তার ভার অতীতকেই বহন করতে দিন৷ কেন সেই অন্ধকারের কালো স্মৃতির ভার বহন করে বর্তমান সময়কে নষ্ট করে সুন্দর ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করবেন। মনে রাখবেন যা আপনার ছিল তা সারাজীবন আপনার-ই থাকবে। যে যাবার সে একদিন না একদিন ঠিকি চলে যাবে। তার চলে যাওয়াতে আপনার জীবন থেমে যাবে না। যারা আপনাকে ভালোবাসে তাদের ভালোবাসার মূল্য দিন। আর যারা ক্ষণিকের জন্য আপনার জীবনে এসেছিল তাদেরকে মনে রাখার দায়িত্ব আপনার না। বৃষ্টির ফোঁটার মতো তাদেরকে ছেড়ে দিন। সবসময় নিজে ভালো থাকুন এবং আশেপাশের সবাইকে ভালো রাখুন। আর নয় অন্ধকারে, চলো এবার আলোতে…….!! (সমাপ্ত
[লেখক :জনি বেগম, শিক্ষার্থী সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ]

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!