বিশেষ প্রতিনিধি::
একফসলি বোরোধানী জমির খাদ্য উদ্ধৃত্ত হাওর জেলা সুনামগঞ্জ। আগামী সপ্তাহ থেকেই পুরোদমে ধানকাটা শুরু হবে। এবার বাম্পার ফলন হলেও করোনার কারণে শ্রমিক সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন ও কৃষকরা। কোন কারণে ফসল মার গেলে জাতীয়ভাবে খাদ্য সরবরাহের প্রভাব পড়ে। এই অবস্থায় হাওরের ধানকাটা শ্রমিকদের ক্ষেতে পাঠাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। শ্রমিকদের জন্য হাওরপাড়ের স্থানীয় বিদ্যালয়গুলো সাময়িক আবাসিক হিসেবে ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে ইতোমধ্যে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের স্থানীয় ধানকাটা শ্রমিক দলের নেতাদের নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে পুরো দল নিয়ে ধানকাটায় নামার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। ধানকাটা শ্রমিক নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করে উৎসাহিত করলে তারা পুরো দল নিয়ে নামলে হাওরের ধানকাটা দ্রুত শেষ হবে এমনটা মনে করছেন তারা। বভিন্ন দলে ভাগ হয়ে কৃষকরা হাওরে ধান কাটতে নামছেন আবহমান কাল থেকেই। এদিকে ধানকাটা মেশিনের সংকটের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছেন দুইজন সংসদ সদস্য। সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামীমা শাহরিয়ার গত ৭ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে ধানকাটার মেশিন বরাদ্দের সহযোগিতা চেয়েছেন।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক লীগ করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সবধরনের দোকানপাঠ বন্ধ থাকায় ধানকাটা, মাড়াইসহ কৃষি যযন্ত্রপাতির দোকান ও ওয়ার্কসপ খোলা রাখার দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেছে। জেলা প্রশাসক হাওরের ধানকাটা নিশ্চিত করতে হাওরাঞ্চলের প্রতিটি বিদ্যালয়কে শ্রমিকদের সাময়িক আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাছাড়া জেলা প্রশাসন স্থানীয় ধানকাটা শ্রমিকদের উদবুদ্ধ করে মাঠে নামাতে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সুধীজনদের আহ্বান জানিয়েছেন। এভাবে হাওরের পাকা ধান গোলায় তোলতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের সদস্য সচিব বিন্দু তালুকদার বলেন, হাওরের ধান পেকে গেছে। আগামী সপ্তাহ থেকেই পুরোদমে কাটা শুরু হবে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের মধ্যে ভয়াবহ এই করোনার কারণে আরো শ্রমিক সংকট প্রকট হয়েছে। তাছাড়া কৃষিযন্ত্রপাতি ও ওয়ার্কসপগুলো বন্ধ থাকায় কৃষকরা যন্ত্রপাতি মেরামত কা ক্রয় করতে পারছেন না। এতে ধানকাটার শঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা এই সংকট থেকে উত্তরণে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, স্থানীয় শ্রমিকদের উৎসাহিত করতে হবে। তাছাড়া শ্রমিকদের স্বার্থে হাওরের বিদ্যালয়গুলো অস্থায়ী আবাসিক হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। হাওরের ধান কাটার লক্ষ্যে স্থানীয় কৃষিযন্ত্রপাতির ওয়ার্কসপগুলো খোলা থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে।