স্টাফ রিপোর্টার::
বহুধা বিভক্ত সুনামগঞ্জ ছাত্র লীগের একাংশ সুনামগঞ্জ জেলা শহরে দেশব্যাপী সজ্জন ও নির্লোভ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে নোংড়া স্লোগান দিয়েছে। একজন হাইপ্রোফাইল ও সৎ রাজনীতিকের বিরুদ্ধে প্ররোচিত হয়ে এই কর্মসূচি পালন করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ জনগণ। ছাত্রলীগের এই আপত্তিকর কর্মসূচিতে তারা যারপর নাই ক্ষুব্দ। তবে জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন ছাত্র লীগের ব্যানারে যারা এই নোংড়া কর্মসূচি করেছে তাদের সঙ্গে ছাত্র লীগের কোন সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমানের পক্ষে ছাত্র লীগের কিছু নেতাকর্মী এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে নোংড়া স্লোগান দিয়ে শুক্রবার বিকেলে এই কর্মসূচি পালন করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। ছাত্র লীগ নেতাকর্মীরা জানান, অতীতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ দলীয় কোন সাধারণ নেতার বিরুদ্ধেও এমন নোংড়া কর্মসূচি পালন করেনি। ছাত্রলীগের সঙ্গে এমএ মান্নানের কোন বিরোধ না থাকার পরও ছাত্রলীগের কিছু কর্মী প্ররোচিত হয়ে এই নোংড়া কর্মসূচি পালন করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
শুক্রবার বিকেলে শহরের আলফাত স্কয়ারে অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের ব্যানারে কিছু নেতাকর্মী এমএ মান্নানের নাম উল্লেখ করে আপত্তিকর ও নোংড়া স্লোগান দেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের ঘনিষ্ট এক নেতাকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে নোংড়া স্লোগান দেওয়াতে উৎসাহ দিতে দেখা যায় এবং সেই স্লোগানের স্বর মোবাইল ফোনে অন্যকে শোনাতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে ছাত্র লীগের ব্যানার নিয়ে মতিউর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারি এমদাদুল হকের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগের কর্মী বিকেলে আলফাত স্কয়ারে জড়ো হোন। তারা এমএ মান্নানের একটি ছবিতে জুতা ও কুশপত্তলিকা লাগিয়ে তার নাম ধরে ‘আপত্তিকর’ ও ‘নোংড়া’ ‘অশ্লীল’ স্লোগান দেন। ছাত্রলীগ কর্মীদের ধৃষ্টতাপূর্ণ এমন স্লোগানে হতভম্ব হন পথচারী ও সাধারণ মানুষজন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী মহলের একজন নেতা এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন নোংড়া স্লোগানে সাধারণ জনতাও অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা ছাত্রলীগকে দিয়ে এমন শিষ্টাচারবিরোধী তৎপরতা থেকে নেপথ্যের নায়কদের সড়ে আসার আহ্বান জানান। এই অপসংস্কৃতি চলতে থাকলে ভালো মানুষরা আশাহত হবেন বলে সাধারণ জনতা ক্ষুব্দ হয়ে জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী শহরের বড়পাড়ার মনির উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ আজ কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্দতিতে তারা কর্মসূচি পালন করতেই পারে। কিন্তু একজন স্বনামধন্য ও দেশখ্যাত নিজের দলীয় নেতার বিরুদ্ধে এমন নোংড়ামী কর্মসূচি করা উচিত হয়নি। তিনি বলেন, যতদূর জানি ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীর সঙ্গে এমএ মান্নানের কোন বিরোধ নেই। তারা কার ইন্দনে এটা করেছে কর্মসূচির মাধ্যমে এটা ষ্পষ্ট করা হয়েছে।
এমএ মান্নানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্র লীগের সহ সভাপতি মোশারফ হোসেন ইমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন, শামীম আহমদ, আশিকুর রহমান রিপন, অভিজিৎ চৌধুরী টিংকু, মাসকাওয়াত জামান ইন্তি, জিসান এনায়েত রেজা চৌধুরী, দীপঙ্কর কান্তি দে, ফয়সাল আহমেদ চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, অরিন্দম মৈত্র অমিয় প্রমুখ।
এদিকে সিনিয়র নেতাদের রেষারেষি নোংড়া কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের কাধে তুলে নেওয়ায় হতাশ হয়েছেন ছাত্র লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের নেতাদের এমন হটকারি ও নোংড়া কর্মসূচি থেকে ভবিষ্যতে বিরত থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাদের কোন্দলে নিজেদের না জড়ানোর জন্য ছাত্রলীগকে আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য দক্ষিণ সুনামগঞ্জে গত বৃহষ্পতিবার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও তার কুশপত্তলিকা দাহ করলেও তার বিরুদ্ধে নোংড়া ও আপত্তিকর কোন স্লোগান দেননি বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।