হাওর ডেস্ক ::
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী গণপরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি প্রয়োজনে পণ্যবাহী যানবাহন চলবে। এই পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। যারা এই পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী পরিবহন করবেন তাদের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনের ২০১৮ সালের ১০২ নম্বর ধারা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এই ধারা লঙ্ঘন করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা দশ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহনের (বিআরটিএ) পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) লোকমান হোসেন মোল্লা পণ্যবাহী পরিবহনে যারা যাত্রী পরিবহন করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশকে অনুরোধ করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ৫ মে পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ রাখাসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। এ অবস্থায় লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ১০২ ধারা অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমতাবস্থায় পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন রোধকল্পে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে এ বিষয় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
আইনে যা রয়েছে
সড়ক পরিবহন আইনের ২০১৮ সালের ১০২ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১১৮ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, তাহা হইলে উক্ত লঙ্ঘন হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১ (এক) মাসের কারাদণ্ড, বা অনধিক ১০ (দশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’
সড়ক পরিবহন আইনের ২০১৮ সালের ১১৮ ধারায় (১) বলা হয়েছে, ‘ যদি কোনো ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধিকে এই আইনের অধীন কোনো তথ্য প্রদান বা অন্য কোনো কার্য করিবার নির্দেশ প্রদান করা হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধি উক্তরূপ নির্দেশ প্রতিপালনে বাধ্য থাকিবে।’
১১৮ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি, চালক, শ্রমিক, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান বা তাহাদের প্রতিনিধি উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো নির্দেশ অমান্য করিতে বা উহা বাস্তবায়নে বাধা প্রদান করিতে বা যাচিত তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল তথ্য পরিবেশন করিতে পারিবেন না।’
এর আগে শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটি বাড়ায় দেশব্যাপী গণপরিবহন চলাচলের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। নতুন মেয়াদে ৫ মে পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ‘পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার প্রথম ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। ছুটির মধ্যে গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
যেসব পণ্যবাহী পরিবহন চলতে পারবে
জরুরি পরিষেবাসমূহ, খাদ্যদ্রব্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, জ্বালানি, ওষুধ, ওষুধশিল্প ও চিকিৎসা বিষয়ক সামগ্রী পরিবহন, কৃষিপণ্য, সার ও কীটনাশক, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতের দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, শিশুখাদ্য, জীবনধারণের মৌলিক উপাদান উৎপাদন ও পরিবহন, গণমাধ্যম ও ত্রাণবাহী পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।