হাওর ডেস্ক ::
ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় হাওরাঞ্চলের ধানকাটা তিন-চার দিনের মধ্যে শেষ করার পরামর্শ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
মে মাসের শুরুতে একটি ঘূর্ণিঝড়ের আভাস দিয়ে ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে আগাম সতর্কতামূলক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যেও হাওরাঞ্চলে বোরো ধানের প্রায় অর্ধেক কাটা হয়েছে বলে একদিন আগেই কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া রোববার বলেন, “লঘুচাপের প্রভাবে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ষণ হচ্ছে।
“বাংলাদেশ-ভারতের আবহাওয়ার তথ্য অনুযায়ী ৩০ এপ্রিলের দিকে নিম্নচাপ আসছে। তা থেকে ৪ অথবা ৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ আসছে। এ জন্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগকে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।”
রোববার রাতে সম্ভাব্য নিম্নচাপের গতি প্রকৃতি, ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ও তীব্রতা নিয়ে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় পাঠায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আরিফুজ্জামান বলেন, “আমরা আশা করি, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ধানকাটা সম্পন্ন হলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না। মে মাসের শুরুতে ভারি বর্ষণ হবে। এতে সামান্য ক্ষতির শঙ্কা থাকলেও আগাম প্রস্তুতিতে তা এড়ানো সম্ভব হবে।”
দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন আন্দামান ও নিকোবর দীপপুঞ্জের নিকবর্তী এলাকায় ৩০ এপ্রিল নাগাদ নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া বিভাগ।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় এটি আরও শক্তিশালী হয়ে গতিবেগ বাড়তে পারে। এটি উত্তর পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে আন্দামান-নিকোবর এলাকা থেকে উত্তর পূর্বদিকে ধাবিত হবে।
সেই হিসেবে ৪ মে অথবা ৫ মে নাগাদ মিয়নমার উপকূল ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় অবস্থান করতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এসময় উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় জোয়ারের থাকবে।
গত তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ঝরছে। রোববার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে কুমিল্লায় ৮১ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বিজলী চমকানো এবং অস্থায়ী দমকা/ ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আগামী ১ মে উজানেও ভারি বর্ষণের শঙ্কার আভাস রয়েছে। এসময় দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম-মেঘালয়-ত্রিপুরা অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের (১২০ মিলিমিটার থেকে ১৬০ মিলিমিটার) পূর্বাভাস রয়েছে। এতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে।
এতে এ সপ্তাহের শেষ নাগাদ মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে শঙ্কা রয়েছে স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যার।