বিশেষ প্রতিনিধি, শাল্লা
প্রশাসনের উদাসীনতায় শাল্লা উপজেলায় টিসিবির মালামাল বিক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। উপজেলায় আনন্দপুর গ্রামের রনঞ্জিত রায়ের শ্রীপালি ভান্ডার নামের প্রতিষ্ঠানটি ডিলারশিপ পেলেও তারা উন্মুক্তভাবে মালামাল বিক্রি করছেনা বলে অভিযোগ আছে। দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসারকে ম্যানেজ করেই তারা নামকাওয়াস্তে মালামাল বিক্রি করছে।
জানা গেছে ডিলারের গোদামের স্থান হবিবপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর বাজারে। তিনি পণ্য উত্তোলন করলেও এখনো গুদামে কোন মাল নেই। ডিলার তার পছন্দের বিভিন্ন জায়গায় মাল রেখে ইচ্ছে মতো বিক্রি করছেন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
টিসিবি আইনে উল্লেখ রয়েছে যেখানে গোদাম সেখানে ই মাল সংগ্রহ করে তদন্তকারী অফিসার গোদাম পরিদর্শন পুর্বক মাল বিক্রির অনুমোদন দেবেন। কিন্তু সেটি একেবারেই হচ্ছে না বরং তাদের মত কর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে নাম মাত্র মাল বিক্রি করে চলছে। তাদের কথিত বিক্রয়স্থলে নেই তদারকরি অফিসার।
সরজমিনে সোমবার বেলা দেড়টায় আটগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন দৃশ্য লক্ষ করা যায়। দেখা গেছে বিক্রয়কালে নিরাপত্তার দায়িত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নেই, তদন্তকারী অফিসার, ডিলার নিজেও অনুপস্থিত। বহু মানুষ করোনা আতংকের মধ্যে ও লাইনে দাঁড়িয়ে আছে ।
এলাকাবাসী বলছেন সরকারি লোকজন সামনে রেখেই কত দুনম্বরী হয়, আর এখানে তো সরকারি অফিসার কেউ আসেইনি, কত আকাম যে হচ্ছে তার হদিস নেই। মাল ক্রয় করতে আসা নাম প্রকাশে অনেছুক কয়েকজন জানান, আমাদের নাম পত্রিকায় লিখবেন না, লিখলে পরে আমাদের মাল দিবে না।
তারা বলেন, কি পরিমান মালামাল তারা আনে কেউ জানেনা, নামে মাত্র কিছু মালামাল দিয়ে বলে জিনিস নাই। তখন আর কিছু করার থেকেনা। তাদের অভিযোগ সরকারি লোকজন থাকলে ক্রেতারা উপকৃত হতো।
ডিলার রঞ্জিত রায়ের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এখন সপ্তাহের ৭ দিন ৫ প্রকার মাল উত্তোলন করেন। প্রত্যেক দিন ১ হাজার কেজি চিনি, ১ হাজার লিটার তৈল, ২০০ কেজি ডাল, ৫০০ কেজি ছোলা ও ১০০ কেজি খেজুর।
তবে বাস্তবে এসব মালামাল বিক্রির কোন দৃশ্য দেখা যায়নি।
এসময় পাশের কয়েকজন রোজাদার জানান, তাদেরকে ১১ টায় আসার কথা বলেছে ডিলারের লোকজন। কিন্তু মাল বিক্রি শুরু করেছে ১ টায় তার উপর কিছু মাল বিক্রি করেই বলবে মাল নাই। পরে অধিকাংশ মালামাল ডিলার কালো বাজারে বিক্রি করে বলে তারা অভিযোগ করেন ।
এনিয়ে তদন্তকারী অফিসার মামুনুর রহমানের ফোনে বার বার কল করা হলে ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলার আনন্দপুর বাজারে গোদাম দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন এর দোহাই দিয়ে এলাকার ৭ টি স্থানে অল্প কিছু মাল ডিলার বিক্রি করছে বলে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন এর সাথে ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ডিলারকে মৌখিক ভাবে উপজেলার ৭ টি স্থানে মালামাল বিক্রি জন্য বলেছি। সেখানে সপ্তাহে ১ দিন করে মাল বিক্রি করবে তদন্তকারী অফিসারের উপস্থিতিতে। কিন্তু তদন্তকারী অফিসার ব্যতিত মালামাল বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়নি। যদি এমন হয় তাহলে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।