1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই: শোকে স্তব্দ হাওর-ভাটি

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭, ২.০৪ এএম
  • ৫০৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার::
রবিবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। শুক্রবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্তনের ফুসফুসের সমস্যায় হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। পরে শনিবার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটায় তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান।
বর্ণিল রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী তুখোড় পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিতের রাজনীতির শুরু বামপন্থী সংগঠনে। সাম্যবাদী দর্শনে দীক্ষা নিয়ে ছাত্রাবস্থায় রাজনৈতিক জীবন শুরু করা এই নেতা দীর্ঘ ৫৯ বছর দাপটের সঙ্গেই চলেছেন।
রাজনৈতিক জীবনের কঠিনতম সময়ে কাউকে পাত্তা দিয়ে চলেননি সুরঞ্জিত। দুর্দান্ত সাহস দেখিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অর্জন করেছেন বহু সম্মান। তবে শেষ জীবনে রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি বেশ দুর্বল হয়ে পড়েন।
সাম্যবাদী দর্শনে দীক্ষা নিয়ে ছাত্রাবস্থায় রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন এই প্রবীণ নেতা। স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদ সদস্যসহ চার দশকের বেশির ভাগ জাতীয় সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। পালন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন সুরঞ্জিত। তিনি ৫ নম্বর সেক্টরের টেকেরঘাট সাব-সেক্টর প্রতিষ্ঠাতা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। সুনামগঞ্জের দুর্গম হাওরাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় নেতৃত্বে ছিলেন তিনি।
সর্বশেষ চলতি নবম জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কমিটিরও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
১৯৩৯ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের আনোয়ারপুর গ্রামে জন্ম সুরঞ্জিতের। তার বাবা চিকিৎসক দেবেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ও মা সুমতি বালা সেনগুপ্ত। তিনি দিরাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং সিলেট এম সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে সন্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ঢাকা সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
দেশের এই প্রবীণ রাজনীতিক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন।
সত্তরের ঐতিহাসিক প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয়ের সময়ও ন্যাপ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৯, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বামপন্থী সুরঞ্জিত ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
তিনি মহাজোট সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ও আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহধর্মিণী ড. জয়া সেনগুপ্ত একটি বেসরকারী সংস্থায় দায়িত্বশীল পদে কর্মরত আছেন। একমাত্র পুত্র সৌমেন সেনগুপ্ত একজন আইটি প্রকৌশলী, বর্তমানে একটি বেসরকারী কোম্পানিতে কর্মরত।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে শোকে ভাসছে হাওর জনপদ সুনামগঞ্জ। বাংলাদেশ একজন প্রজ্ঞাবান, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সক্রিয় ও সাহসী কণ্ঠকে হারিয়েছে। বিশ্বের বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে বিলাপ করছে হাওর-ভাটির জনপদের সর্বস্তরের মানুষ।
আজ দুপুরে দিরাইয়ে তার নিজ বাসভবনে মরদেহ নিয়ে আসা হবে। এখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!