স্টাফ রিপোর্টার::
জাতীয় নেতা, একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও দিরাই-শাল্লার সাতবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে তার নির্বাচনী এলাকা দিরাই-শাল্লায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দিরাই উপজেলা শহরের বাসায় নেমেছে শোকার্ত মানুষের ঢল। শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ঢল নামে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিরাইস্থ বাস ভবনে। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বিলাপ করছেন।
বর্ষীয়ান এই নেতার মৃত্যুতে দিরাই-শাল্লায় ৩ দিনের শোক ঘোষণা করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে উপজেলায় ৩ দিনের শোক ঘোষনা করেছে দিরাই পৌর পরিষদ। সোমবার বেলা ৩টায় সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিরাইস্থ নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
রবিবার ভোর ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই পৌরসভার আনোয়ারপুর গ্রামে দেবেন্দ্র সেন ও সুমতি বালার ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই বামপন্থী রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহ চারদশকের প্রায় সব সংসদ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।
ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন। তিনি ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৯, ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ৫ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
সর্বশেষ চলতি নবম জাতীয় সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কমিটিরও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন সুরঞ্জিত। মহাজোট সরকারের আমলে তিনি রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ৫৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্টিত করতে সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি আজীবন প্রগতির পথে হেঁটেছেন।