বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে করোনা জয় করে বাড়ি ফিরে গেলেন একই পরিবারের ৩ জন। বৃহষ্পতিবার ওই পরিবারের ১৪ বছর বয়স্ক মাদরাসার ৭ম শ্রেণি পড়–য়া ছাত্র শাহরিয়ারকে আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দিয়েছে সুনামগঞ্জ ২৫০ সয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেলের কর্তৃপক্ষ। এদিকে শাহরিয়ার ছাড়াও আরো তিনজন করোনা জয় করে বাড়ি ফিরেছেন গতকাল। এ নিয়ে সুনামগঞ্জে ১৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেলেন।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের টাইলা গ্রামের কৃষক আশিক মিয়া (৫৫) এর কন্যা হাফিজা আক্তার (২০) গত ১২ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হন। তার বাড়ি লকডাউন করে তাকে আইসোলেশনে নিয়ে আসা হয় ওইদিনই। পরে তার পরিবারের ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এতে বাবা আশিক মিয়া ও হাফিজার চাচাতো ভাই মাদরাসা ছাত্র শাহরিয়ারের করোনা পজেটিভ আসে। পরে তাদেরকেও সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে নিয়ে আসা হয়। তবে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন হাফিজার করোনা উপসর্গ থাকলেও বাবা ও চাচাতো ভাইয়ের কোন উপসর্গ ছিলনা। তাদেরকে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশির চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুই দফা হাফিজা, তার বাবা আশিক মিয়া ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গত ১০ মে হাফিজার করোনা নমুনা রিপোর্টে তার ফলাফল নেগেটিভ আসলে তাকে ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল হাফিজার বাবা আশিক মিয়ার সর্বশেষ করোনার নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাকেও ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হয়। সর্বশেষ এই পরিবারের সদস্য দক্ষিণ সুনামগঞ্জের দরগাহপুর মাদরাসার ৭ম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ারকেও বৃহষ্পতিবার সুস্থতার ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হয়। স্বজন ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন তারা সবাই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
মাদরাসা ছাত্র শাহরিয়ার আহমদ বলেন, আমি আর চাচা ভালো ছিলাম। আমাদের জ্বর, সর্দি, কাশি কিছুই ছিলনা। তারপরও তারা আমাদের হাসপাতালে নিয়ে এসে দুই বেলা নিয়ম করে চিকিৎসা দিয়েছেন। আমাদেরকে ডিম, কলা ও আপেলসহ পুষ্টিকর খাবারও দিয়েছেন। আমরাও প্রতিদিন বাড়ি থিকে নিয়ে আসা আদা ও লেবুজল গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করতাম। আমরা হাসপাতালে স্বাভাবিক ছিলাম। কোন ভয় পাইনি।
এদিকে বৃহষ্পতিবার দুপুরে শাহরিয়ারের পাশাপাশি সুনামগঞ্জ জেলার আরো ৩জন করোনা আক্রান্ত রোগীর ফলাফল নেগেটিভ আসায় তাদেরকেও আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন থেকে ১জন স্বাস্থ্যকর্মী, সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতাল থেকে জগন্নাথপুরের ১জন এবং হোম আইসোলেশন থেকে জগন্নাথপুরের আরেকজনকে সুস্থতার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৯জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ১১জনসহ জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬৮জন।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিন বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আক্রান্ত একই পরিবারের তিনজনের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। আজ একজন বিদায় নিয়েছেন। এছাড়াও জগন্নাথপুর, সিলেট শামসুদ্দিন হাসপাতাল ও হোম আইসোলেশন থেকে সুস্থ হয়ে জগন্নাথপুরে আরো ৩জন করোনা রোগীকে বিদায় করা হয়েছে।