বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ করোনাকে পাত্তা না দিয়ে শহরের বিপণি বিতানগুলোতে ঈদ বাজারের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। কেউ মানছেনা স্বাস্থ্য বিধি। না ক্রেতা, না বিক্রেতা। ফলে ঝুঁকির মুখে এখন শহরবাসী। দোকানপাট খোলা পেয়ে বহুদিন পর ক্রেতারা দোকানে হামলে পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আগামী ঈদ পর্যন্ত ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ জানালেও কোন ব্যবসায়ী তা শুনেননি। ফলে সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি দোকানপাটই এখন উন্মুক্ত রয়েছে। তাই বাজারে ভিড় বেড়ে চলছে। এদিকে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন প্রশাসনের প্রতি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা না হলে ক্রেতার ¯্রােত বন্ধ করা যাবেনা। এতে করোনা সংক্রমণের বড়ো ঝুকি থাকবে।
সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সরকার গত ১০ মে সারাদেশের দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি এই ঘোষণায় ক্রেতা-বিক্রেতাকে ১০টি বাধ্যতামূলক শর্ত জুড়ে দেয়। কোন দোকানে ৫ জনের বেশি ভিড় করতে পারবেনা, বাধ্যতামূলক মাস্ক থাকতে হবে, প্রবেশমুখে জীবানুনাশক স্প্রেসহ জীবানু ছিটানোর ব্যবস্থা রাখার নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কোন দোকানদার তা মানছেন না। ক্রেতারাও মানছেন না। এই ভয়াবহ ভিড়ের কারণে করোনা ঝূকি বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৫ মে পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। গতকাল শুক্রবার আবারও নির্ধারিত দিনে চেম্বার অফ কমার্স কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। তারা সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীদের করোনা ভয়াবহতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আগামী ঈদ পর্যন্ত দোকান পাট বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ জানান, তারা সাংগঠনিকভাবে দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ করলেও কেউ মানছেন না। বিক্রোতারাও সরকারি শর্ত মানছেন না। অন্যদিকে প্রশাসনও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেনা। ফলে শনিবার থেকে বাজারে মারাতœক ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে কাপড়সহ বিভিন্ন দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে জেলায় এ পর্যন্ত ৬৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। তবে ভিড়ের কারণে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যবিভাগ।
শহরের আলীপাড়ার সাইদ আহমদ বলেন, শনিবার বাজারে এসে দেখি মানুষের অনেক ভিড়। ঈদের আমেজ বাজারে। তাই ভিড়ে না ডুকে ফিরে যাই। তিনি বলেন, যেভাবে মানুষ বাজারের দোকান পাটে হামলে পড়ছে তাতে অনেকেই করোনা সংক্রমিত হতে পারেন। তাই ভিড় বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খায়রুল হুদা চপল বলেন, আমরা সরকারি ঘোষণার পরও ১৫ মে পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ রেখেছিলাম। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বৈঠক করে গতকাল শুক্রবার দোকানপাট বন্ধ রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছিলাম। তাদের হয়ে আমরা মালিকদেরকেও দোকান ভাড়া মওকুফের অনুরোধ করেছি। আশ্বস্থ করেছি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সরকারি সহযোগিতা পাইয়ে দেওয়ার। আমরা অনেক ব্যবসায়ীকে সহযোগিতাও করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলো কেউ শুনছেনাম, স্বাস্থ্যবিধিও মানছেনা। আমরা প্রশাসনকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার অনুরোধ করেছি।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়েছি বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের মারাতœক ভীর লেগেছে। চেম্বার অব কমার্স ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ঈদ পর্যন্ত বন্ধ রাখার আহ্বান জানালেও কেউ মানছেনা। আজ সকালে পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজন বাজারে গিয়ে মানুষকে ভিড় এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে। আমরা উর্ধ¦তন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করেছি।