হাওর ডেস্ক ::
সরকারি গুদামের মজুদ বাড়াতে ধান-চাল কেনার গতি বাড়াতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। একই সঙ্গে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তালিকা হালনাগাদ করতে বলেছেন তিনি।
রোববার মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
সভার সমন্বয় করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। ভিডিও কনফারেন্সে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ ওই বিভাগের সব জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি-ফুড) বক্তব্য রাখেন।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী আরও বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ আসায় প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছিল। অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখনও এ সমস্যা রয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। যে কোনো প্রকার হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেন সাধন চন্দ্র মজুমদার।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদেরকে সরিয়ে নতুন করে কোনো ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা সাত দিনের মধ্যে প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী বলেন, কৃষক বোরোতে এবার বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দাম পাচ্ছে। এই বাজার দর ধরে রাখতে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ মোতাবেক খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে। ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়ারও হুশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত পড়ে না থাকে। এজন্য আউশ মৌসুমে কৃষক যেন আউশ ধানের চাষ করে। যে সমস্ত কৃষক আউশের প্রণোদনা নিয়েছেন; তারা বীজ তলা তৈরি করেছে কিনা- তা যাচাই করে দেখতে স্থানীয় কৃষি প্রশাসনকে নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রী।
কৃষকদের আউশ আবাদে আন্তরিক হবার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের আউশ ধানের আবাদে আরও আন্তরিক হতে হবে। অনেক কৃষকই আউশ মৌসুমে প্রণোদনা নিয়ে থাকে। কিন্তু পরে আর আবাদ করে না। এ ধরণের প্রমাণ মিললে প্রণোদনা বাতিলসহ পরবর্তীতে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে।
ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবেলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, এবারের প্রকিউরমেন্ট যেন কৃষকবান্ধব প্রকিউরমেন্ট হয়। চালের মান নিয়ে কোনো আপোষ নেই। ধান-চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলায় সংগ্রহ কমিটি রয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশের অনেক জায়গায় লটারি হয়েছে এবং বাকি জেলা-উপজেলায়ও খুব শিগগিরই লটারি সম্পন্ন হবে। লটারি করার সময় সংগ্রহ কমিটির প্রতিটি সদস্য যেন উপস্থিত থাকেন; বিশেষ করে সংগ্রহ কমিটিতে যিনি কৃষক প্রতিনিধি রয়েছেন তিনি যেন লটারির সময় উপস্থিত থাকেন। লটারি করার পর আগে থেকেই ওয়েটিং লিস্ট করে রাখারও নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কোনো কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফরিয়াদের কাছে বিক্রি না করেন এজন্য তিনি সাবধান করে দেন।