হাওর ডেস্ক::
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ২৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৫৯ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৩২১ জন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মে) করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ১১ জন পুরুষ এবং চারজন নারী। বয়স বিবেচনায় এঁরা ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন । এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৫৯ জনের।

জানানো হয়, নতুন যে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের সাতজন এবং চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা সিটিতে ছয়জন এবং ঢাকা বিভাগের অন্য জেলা নারায়ণগঞ্জে একজন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম সিটিতে দুইজন, সিটির বাইরে চট্টগ্রাম জেলায় দুইজন, কক্সবাজারে দুইজন এবং কুমিল্লায় দুইজন।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন আট হাজার ৪২৫ জন।

ডা. নাসিমা জানান, করোনা পরীক্ষায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে একটি ল্যাব সংযোজিত হয়েছে। এটি হলো সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ। এ নিয়ে করোনা পরীক্ষায় এখন মোট ল্যাবের সংখ্যা ৪৯। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৯ হাজার ২৬৭টি। সমস্ত ল্যাবে পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজার ৩১০টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে দুই হাজার ২৯ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৩২১ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দুই লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৬টি।

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ২৪৮ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন চার হাজার ৯৮৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৩৮ জন।

বুলেটিনে জানানো হয়, ঢাকাসহ সারা দেশে মোট আইসোলেশন সংখ্যা ১৩ হাজার ২৮৪টি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৪টিতে।

কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন চার হাজার একজন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪০৪ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ৭৫ হাজার ১০৫ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ১৬ হাজার ৮১২ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৮ হাজার ২৯৩ জন।

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৮টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৮১ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৬ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো ১৪ জন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ২০১ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।