1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন

ছাতকে লিচুর বাম্পার ফলন: করোনার কারণে চাষিরা আর্থিক ক্ষতির শঙ্কায়

  • আপডেট টাইম :: শনিবার, ৩০ মে, ২০২০, ৪.০৯ পিএম
  • ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে

তমাল পোদ্দার::
ছাতকে চলতি বছরেও লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ ধসে পড়া ও বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাসের কারনে এখানের লিচু চাষিদের রয়েছে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা। রাজারগাঁও থেকে চৌমুহনী বাজার রাস্তার একটি ব্রিজ ধসে পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ওই কারনে লিচু নিয়ে দোয়ারা উপজেলার বালিউরা বাজার হয়ে তাদের ছাতক শহরে আসতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খাতে তাদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। লিচু চাষীরা জানান, লিচু বাজারজাত করতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। এ অঞ্চলে উৎপাদিত লিচু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়। এবার করোনা ভাইরাসের কারনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় শুধু সিলেট অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিক’লতার মধ্যেও লিচু চাষীরা থেমে নেই। প্রকৃতির বিরূপ আচরণ ও অনুপযোগী যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে লড়াই করেই তারা লিচু চাষ অব্যাহত রেখেছেন। কিছুদিন আগেও বাগানকে চামচিকা পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে তাদের প্রচুর কষ্ট করতে হয়েছে। অবশ্য সে সমস্যা লাঘব করেছেন এখানের স্থানীয় সংসদ সদস্য। এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের প্রচেষ্টায় গ্রামগুলো বিদ্যুতায়িত হয়েছে। বিদ্যুতায়নের আগে বাগানের অর্ধেক লিচু চামচিকা, বাদুড় ও পোকামাকড় নষ্ট করে ফেলতো। এখন বিদ্যুতের কারনে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যাবহার করে পোকামাকড়, চামচিকা, বাদুড়, কটকটি ইত্যাদি প্রাণী তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে। গ্রামের বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, জৈষ্ঠ্য মাসের রসালো ফল পাকা লিচু এখানের গাছে গাছে ঝুলছে। চারিদিকে পাকা লিচু আর লিচুর সমাহার। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের মানিকপুর, গোদাবাড়ী, বড়গল্লা, চানপুর, রাজারগাও, কচুদাইড় গ্রামে রয়েছে লিচুর বাগান। দোয়ারাবাজার উপজেলার লামাসানীয়া গ্রামেও লিচু বাগানের বিস্তৃতি ঘটেছে। স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ছাতকের মানিকপুর গ্রামে প্রথমে বাণিজ্যিক ভাবে লিচু চাষ শুরু হয়। শতাধিক বছর পূর্বে গৌরীপুরের জমিদারের কাছারিবাড়ী ছিল মানিকপুর গ্রামে। বর্তমানে ওই বাড়ীটিতে মানিকপুর জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। জমিদারের নায়েব হরিপদ রায় ও শান্তিপদ রায় কাছারি বাড়ীতে কয়েকটি লিচু গাছ লাগিয়েছিলেন। বিশাল আকারের লিচু গাছগুলো এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব লিচু গাছ থেকে গ্রামের বাড়ীতে বাড়ীতে ২/১ টি করে গাছ লাগিয়েছিলেন গ্রামের লোকজন। এ গাছগুলোতে লিচুর ভালো ফলন এবং বাজারমূল্য পাওয়ায় লিচু চাষে গ্রামের অনেকেই আগ্রহী হয়ে পড়েন। এর পর থেকেই শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে লিচু উৎপাদন। আর ২০১৪ সালে বাগানীরা কোটি টাকার লিচু বিক্রি করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ওই সময় থেকেই লিচুর গ্রাম হিসেবে মানিকপুর পরিচিতি লাভ করে। পর্যায়ক্রমে আশ-পাশের গ্রামগুলোতেও বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ শুরু হয়। লিচু চাষী আবু তাহের রইছ মিয়া, আলী হোসেন, আরব আলী, শুকুর আলী, জামাল উদ্দিন, বাদল মিয়া, মতিউর রহমান, রবি মিয়া, আনর মিয়া, ফরিদ মিয়া, বাচ্চু মিয়া, রুস্তুম আলী জানান, বাড়ীর আঙ্গিনায় রোপণকৃত গাছের লিচু বিক্রি করে তাদের কিছুটা আয় হলে তারা লিচুর বাগান করতে আগ্রহী হন। মূলত তারা জমিদারের কাছারি বাড়ীর লিচু গাছ থেকেই চারা সংগ্রহ করে লিচুর বাগান করেছেন। প্রতিবছরই এখানে লিচুর ভালো ফলন হচ্ছে। কয়েকটি গ্রামের বাগানীরা লিচু বিক্রি করে প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় কোটি টাকা আয় করেন। দোয়ারাবাজার উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ও গোদাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ জানিয়েছেন, লিচু চাষে মানুষকে আগ্রহী করতে অব্যাহত ভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, ছাতকে পূর্ব থেকেই লিচুর ফলন হতো। বর্তমানে এখানে উন্নতজাতের লিচুর চাষ হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগ লিচু চাষীদের সবধরনের সহযোগিতা করছে। কয়েকবছর আগে সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল এখানের চাষীদের উন্নত জাতের লিচুর চারা দিয়েছিলেন। এসব চারা থেকে এখানে বড় আকারের লিচুর ফলন হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!