বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জনগণের অসচেতনতা ও বেপরোয় চলাচলের কারণে সুনামগঞ্জ জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব, পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য সপরিবারে আক্রান্ত হয়েছেন। সংগৃহিত অল্প নমুনা থেকেই আশঙ্কাজনকভাবে সংক্রমণ ধরা পড়ছে। বেশি পরিমাণে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা গেলে এই সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় পিসিআর ল্যাবের গত চারদিনের সংগ্রহিত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনা করে আশঙ্কাজনক সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি ধরা পড়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় ২৬৯জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন দুইজন।
শাবির পিসিআর ল্যাব সূত্রে জানা গেছে গত ২ জুন সুনামগঞ্জের ১৮৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৩৯ জনেরই করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ২২৭টি নমুনার মধ্যে ১৮৮টি পরীক্ষা করে ওই সংখ্যক সংক্রমণ ধরা পড়ে । পরদিন ৯৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলে পরীক্ষা করে ৬ জনের শরিরে করোনা ধরা পড়ে। পরদিন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩১জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। শুক্রবার ৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের শরিরেই করোনা পজেটিভ ধরা পড়েছে। এভাবে প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকভাবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণ আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি পাওয়ায় কঠোর লকডাউনসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মানুষজন। প্রশাসনিক তৎপরতা কঠোর না হলে এবং জনগণ বেপরোয়া চলাচল বন্ধ না করলে সংক্রমণ মাত্রা আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে সচেতন মহলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে লকডাউন খুলে দিয়ে সব কিছু সীমিত করার সরকারি ঘোষণার পর কেউ সীমিত পরিসরের ব্যবস্থাকে মানছেন না। গাড়ি, নৌ যানে গাদাগাদি করে চলাচল করছে মানুষ। নজরদারির অভাবে পরিবহণগুলো গাদাগাদি করে যাত্রী বোঝাই করে অতিরিক্ত ভাড়া হাকিয়ে নিচ্ছে। আবার জেলা শহরের বাজারসহ প্রতিটি উপজেলা শহরের বাজার এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে লোক সমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে জনগণ আগের মতোই স্বাভাবিকভাবে বাজারে চলাফেরা করছেন। যার ফলে করোনা সংক্রমণ ঝূকি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া অনেকে নমুনা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করে অন্যদেরও সংক্রমিত করার ঝূকিতে ফেলে দিয়েছেন।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বাসিন্দা ওবায়দুর রহমান কুবাদ বলেন, আমাদের সুনামগঞ্জ জেলার অবস্থা এখন ভয়াবহ। জনগণ বেপরোয়াভাবে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছেন। পরিবহণ শ্রমিক মালিকরা আগের মতোই বেশি ভাড়া নিয়ে যাত্রী বোঝাই করে চলছে। এতে সংক্রমণ ঝুকি বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, সময় এসেছে কঠোর লকডাউন দিয়ে মানুষকে রক্ষা করার। লডাউনের সময় যাতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হয় এ ব্যবস্থাও নিতে হবে। না হলে সুনামগঞ্জের অবস্থা ভয়াবহ হবে।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. শামসুদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জে আশঙ্কাজনকভাবে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এতে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে হবে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে নিজের ঘরে অবস্থানের আহ্বান জানান তিনি।