তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ::
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চরম গাফিলতিতে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে ১৩ টি হাওরে চলতি বোরো ফসল রক্ষা বেড়ি বাঁধ নির্মাণের অধিকাংশ বাঁধের কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় লক্ষাধিক কৃষক পরিবার চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ২৮ ফেব্রুয়ারী ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো অধিকাংশ বাঁধে এক টুকড়ি মাটি না দিয়ে লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পাউবো কর্মকর্তারা। পর পর বাঁধের কারণে ফসল ডুবির ঘটনা ঘটলেও তাদেও টনক নড়েনি। ফলে চলতি মওসুমে বারো ফসল রক্ষা নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন হতাশায়। জামালগঞ্জ পাকনা হাওরের ছোট-বড় ১৬ টি, সানোয়া ডাকুয়া হাওরের ৬ টি ও হালির হাওরে ২৭ টি বেড়ি বাঁধ ও ক্লোজারের মধ্যে ২০ শতাংশ কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুভে ফুসছেন কৃষক।
কৃষকদের মতামতের তুয়াক্কা না করে হাওরে জমি নেই, এমন লোকদের নিয়ে উপজেলা ফসল রক্ষা কমিটি গঠন করায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সরেজমিনে হাওরের বিভিন্ন বাঁধে গেলে কোথায় হাওরের বাঁধ নির্মানে তেমন কোন কাজ চোখে পড়েনি। নাম মাত্রে কয়েকটি বাঁধে কাজ চললেও তা সন্তোষ জনক নয় বলে কৃষকদের দাবী
চলতি মৌসুমে বোরো ফসলের উৎপাদনের লক্ষমাত্রা, হাইব্রীড উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান ৫৯২৫ মে:টন, উফসী জাতীয় ফসল ৯১৪১৫ মে:টন, স্থানীয় জাতের ফসল ৮৮১ মে:টনসহ অন্যান্য ফসল প্রায় ১ লাখ মেট্রিকটন । যার বাজার মুল্য হবে প্রায় ৩’শ কোটি টাকা। পাহাঢ়ী ঢল (অকাল বন্যা) এর হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য প্রতি বছরই পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) টিকাদারী প্রতায় বাঁধ-বেড়ি বাঁধ নির্মান করে আসছে। সম্প্রতি নাম মাত্রে কয়েকটি বাঁধের কাজ শুরু করলেও তা চলছে কচ্চপ গতিতে।
জামালগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার ইফসুফ আল-আজাদ বলেন, “জামালগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মান কমিটি অথর্ব”। যাদের এই হাওরে কোন জমি নেই, তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে এগুলো কৃষক-কৃষাণী মারার আলামত। পাউবোর অধিনে সব কাজই চুরিবিদ্যা। হাওর উন্নয়ন বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ফসল রক্ষার দাবী জানান তিনি। উপজেলার ৯ সদস্যের কমিটিতে থাকা উপজেলা প্রকল্প বায়বায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শাহাদাৎ হোসেন ভুইয়া বলেন, আমরা শুধু কমিটিতেই থাকি আসলে আমাদের কোন তদারকির দায়িত্ব নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ড.সাফায়েত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, পাউবোর কাজে আমাদেরকে শুধু মিটিং করার সময় ডাকা হয়। উপস্থিতির স্বাক্ষর নিলেও মতামতের কোন গুরুত্ব দেয়না।