হাওর ডেস্ক::
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার ১৪ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭৮৩ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন।
আজ সোমবার (২৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা ৩৬ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। এঁদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭৮৩ জনের।
জানানো হয়, নতুন যে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১০ জন, খুলনা বিভাগের পাঁচজন, রাজশাহী বিভাগের একজন, ময়মনসিংহ বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের তিনজন এবং বরিশাল বিভাগের তিনজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন, বাসায় ১৪ জন এবং একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৫৩ জন। এ নিয়ে দেশের করোনা সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৮০ জন।
ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ৪১৩টি। একই সময় পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৭ হাজার ৮৩৭টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে চার হাজার ১৪ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে সাত লাখ ৪৮ হাজার ৩৪টি।
সারা দেশের করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতাল সম্পর্কে তথ্যে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা ছয় হাজার ১৫টি এবং আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ১৩৪টি, সারা দেশে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৪ হাজার ৬৯০টি, সারা দেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৭৪টি এবং সারা দেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১১ হাজার ১০৮টি।
জানানো হয়, করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে করোনা রোগীদের জন্য ভর্তি চলমান। এখানে অনেক শয্যা খালি রয়েছে। এ ছাড়া ব্যবস্থা রয়েছে আইসিইউ-এর।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো এক হাজার ২৮ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬০৯ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ২৫ হাজার ৮৩৮ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৯৪২ জন।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন তিন হাজার ৫৩ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৯২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট তিন লাখ ৬১ হাজার ২২৪ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৯৬ হাজার ৩৬৫ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬৪ হাজার ৯৫৯ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর’র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৬৯ হাজার ৪১৮টি। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে এক কোটি ৩৭ লাখ ৮১ হাজার ১৬৯ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো চারজন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ৪০৮ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।