হাওর ডেস্ক::
প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট অকাল বন্যায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ভেসে গেছে পাচ শতাধিক পুকুরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক মৎস্যচাষী। আকস্মিক এ বন্যার কারণে তাই এসব মৎস্যচাষীদের মাথায় হাত। অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে একের অধিক পুকুর নিয়ে খামার করেছিলেন। এখন ঋণের ভারে ও বর্তমান করোনাকালীন সময়ে জীবিকার যোগান নিয়েই তারা শংকিত।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারগুলির একটি মোমিন ফিশারিজ এন্ড এগ্রো লিমিটেড, যা সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের বল্লভপুর ও চানপুর গ্রাম নিয়ে অবস্থিত। ১০ একর জায়গা নিয়ে ৭টি পুকুরে চাষ করা হয়েছিল মাছ। আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে ফিশারীর তেলাপিয়া, রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্পু, গ্রাস কার্প , শিং ও পাবদা মাছ।
মোমিন ফিশারিজ এন্ড এগ্রো লিমিটেড এর পরিচালক আব্দুল আলীম জানান, দেড় লক্ষ তেলাপিয়া, দেড় লক্ষ তেলাপিয়া মাছের পোনা, ১ লক্ষ ২০ হাজার শিং, ১ লক্ষ পাবদা, বাকী সব মাছ প্রায় ২০ হাজারের মতো ছিল। গতবছর সীমিত আকারে মাছ বিক্রি করা হলেও এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সব মাছ বিক্রি করার। যা বিক্রি করা গেলে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মতো পাওয়া যেতো। কিন্তু অকাল বন্যার কারণে এ বছর আমাদের পুরোটাই পানিতে ভেসে গেছে।
তিনি জানান, গত শুক্রবারে মাছ বিক্রি শুরু করে প্রথম দিন মাত্র ৫০০ কেজি তেলাপিয়া বিক্রি করা হয়। টার্গেট ছিল পরের দিন থেকে পুরোদমে মাছ বিক্রি করার। একমাস মাছ বিক্রি করতে পারলে লক্ষমাত্রা পুরণ হতো। কিন্তু শুক্রবার বিকালের ঝড়ে পুকুরের সুরক্ষায় দেয়া নেট উড়ে যায় এবং পানি বেড়ে যাওয়ায় ভেসে যায় সব মাছ। যা আমাদের জন্য অপুরণীয় ক্ষতি। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া বর্তমান অবস্থায় আমাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দায়িত্বে থাকা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সীমা রাণী বিশ্বাস জানান, আকস্মিক এ বন্যায় উপজেলার প্রায় ৫ শতাধিক পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মৎস্যচাষীরা। তাদের পুর্ণাঙ্গ তালিকা করছি। সরকার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের ভর্তুকি প্রদান করা হলে মৎস্য চাষীরা উপকৃত হবেন। ইতিমধ্যে সরকার করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীদের প্রনোদনা হিসেবে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান শুরু করেছেন।