বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের উজ্জ্বলপুর এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সড়কটি আকষ্মিক বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। এতে যাতায়াত দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্ভোগ লাগবে স্থানীয় সরকার বিভাগ বা স্থানীয় প্রশাসন এগিয়ে আসার কথা থাকলেও মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে ব্যবসার উদ্যোগ নিয়েছে জামালগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। এখন যাত্রীদের পারাপারে প্রতিবার ৫টাকা দিতে হচ্ছে। কেউ মোটরবাইক বহন করলে দিতে হচ্ছে ১০ টাকা। জামালগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়ে গণবিরোধী এমন ব্যবসার উদ্যোগ নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।
জানা গেছে গত ২৭ জুন পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যায় উজ্জ্বলপুর সড়কটি। প্রায় ৪০০ মিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে জামালগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের জেলা ও বিভাগীয় শহরের সঙ্গে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এই দুর্ভোগ লাঘবে উপজেলা প্রশাসন এগিয়ে আসার কথা। কিন্তু দুর্যোগ কবলিত মানুষের সহায়তা না করে উপজেলা প্রশাসন ভেঙ্গে যাওয়া সড়কে বাণিজ্যিকভাবে খেয়া পারাপারের উদ্যোগ নিয়েছে। গত ২ জুলাই উন্মুক্ত নিলামে খাশ কালেকশনের উদ্যোগ নিয়ে খাশ কালেকশন তোলা হচ্ছে সেখানে। তাও আবার খেয়া পারাপারের ইজারানীতিমালা ভঙ্গ করে পারাপারে প্রতিবার যাত্রী প্রতি ৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের এমন গণবিরোধী বাণিজ্যিক উদ্যোগের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা।
স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, দুর্যোগের সময় উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ বা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সাময়িক সময়ের জন্য দুর্ভোগ লাগবে বিনামূল্যে পারাপারের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তা না করে উপজেলা প্রশাসন ব্যবসার উদ্যোগ নেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত এক জনপ্রতিনিধি বলেন, উপজেলা প্রশাসন বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের নিয়ে ব্যবসা করবে এমন চিন্তা কল্পনাও করা যায়নি। কিন্তু আমাদের এখানে এমনটিই ঘটেছে। উপজেলা প্রশাসন বন্যা কবলিত ও দুর্যোগ প্রবণ এলাকার মানুষকে সেবা না দিয়ে তাদের পকেট থেকে টাকা বের করার বুদ্ধি বের করেছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন দুর্যোগ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেনা। এটা গণবিরোধী কাজ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়কের উজ্জ্বলপুর এলাকায় বেশ কিছু জায়গা বন্যায় ভেঙ্গে গেছে। স্থানীয়ভাবে অনেকে নিজ উদ্যোগে খেয়া চালু করে ব্যবসা করার চেষ্টা করেছে। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। তাই শৃঙ্খলার জন্য আমরা নিলামের মাধ্যমে খাশ কালেকশন দিয়েছি সাময়িক সময়ের জন্য। খাশ কালেকশন থেকে যা আসবে এখানের উন্নয়নেই সেটা ব্যবহার হবে। দুর্যোগ কবলিত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এমন উদ্যোগ নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ব্যবসা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।