ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে অপরিকল্পিত পাথর ডাম্পিং এবং লোডিং-আনলোডিংয়ের কারনে হুমকীর মুখে পড়েছে সোনাই নদী বেরীবাঁধ ও রাবারড্যাম প্রকল্প। কতিপয় অতিলোভী পাথর ব্যবসায়ী লোডিং-আনলোডিংয়ে সহজ সুবিধা নিতে বেরীবাঁধ কেটে ক্ষত-বিক্ষত করে গোটা প্রকল্পকে হুমকীর মুখে ঠেলে দিয়েছে। ফেলোডার দিয়ে নৌকায় পাথর লোডিং করতে বেরীবাধের বেশ কটি জায়গা কেটে ফেলা হয়েছে। আবার কোন-কোন পাথর ব্যবসায়ী রাবার ড্যাম এর গোড়ায় পাথর ডাম্পিং করে নৌকায় লোড করতেও দেখা গেছে। সরকারি সম্পদ নষ্ট করে স্থানীয় এসব প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা দাপটের সাথে সোনাই নদী বেরী বাঁধের উপর জমজমাট পাথর ব্যবসা করে যাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে পাথর লোডিং-আনলোডিংয়ে ফেলোডার বা ট্রাক্টর ব্যবহার সুবিধার্থে এসব ব্যবসায়ীরা বেরীবাধকে কেটে বাড়তি সুবিধা ভোগ করে থাকে। আবার বর্ষা শেষে ক্ষত-বিক্ষত বেরীবাঁধ মেরামতের কথা বলে এসব ব্যবসায়ী স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে চাঁদাও আদায় করে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে বেরীবাধের উপর পাথর ব্যবসায়ীদের চলে আসা তান্ডবে অস্থিত্ব হারাতে বসেছে এখন সোনাই নদী বেরীবাঁধ। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলেও এসব ব্যবসায়ীর অশুভ শক্তির কাছে তাদের হার মানতে হচ্ছে। এদিকে বেরীবাধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগামী বোরো মৌসুমে পানি সেচের তীব্র সংকট সৃষ্টিরও আশংকা করছেন এখানের কৃষকরা। জানা যায়, উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বাহাদুর-বৈশাকান্দি এলাকার অনাবাদী জমিকে আবাদের আওতায় আনতে ২০০৮ সালে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাই নদীর উপর রাবারড্যাম ও উভয় পাড়ে স্থায়ী বেরীবাঁধ নির্মাণ করা হয়। রাবারড্যাম প্রতিষ্ঠার পর এখানের কৃষকদের ভাগ্যে সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার উন্মুচিত হয়। আর এটা সম্ভব হয়েছে স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির, স্থানীয় ইউনুস আলী, আমির উদ্দিন, আবু তাহের, মাও. রফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, মোন্তাজ আলী, বিলাল মিয়াসহ লোকজন জানান, বেরীবাঁধটি বর্তমানে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বাঁধের বিভিন্ন স্থান কেটে ফেলা হয়েছে পাথর পরিবহনের কারনে। বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় কৃষকরা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যতায় সরকারি রাবার ড্যাম প্রকল্প এক সময় বন্ধ হয়ে যাবে। মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে এখানের ফসলী জমি। বিএডিসি পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল জব্বার খোকন জানান, প্রতি বছরই কোন না কোনভাবে বেরী বাঁধের ক্ষতি করা হচ্ছে। কৃষি এবং কৃষকের স্বার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবী জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান জানান, বর্তমানে স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির মাধ্যমে প্রকল্পটি দেখাশোনা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সমিতির দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।