স্টাফ রিপোর্টার::
বন্যায় তলিয়ে গেছে বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের শেষ প্রজন্মের অন্যতম শীষ্য বাউল লাল শাহ’র সঙ্গীতঘর। নিভৃতচারী ও বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী বাউল লাল শাহ এ বছর মানুষ উৎসব করে বোদ্ধা মহলে আলোচনায় এসেছিলেন। তার মানুষ উৎসবে দেশ বিদেশের বিদগ্ধজন অংশ নিয়েছিলেন। দরিদ্র এই শিল্পীর গানেরঘর বন্যায় তলিয়ে যাওয়ায় তার হারমোনিয়াম, তবলা, খোলসহ সবগুলো সঙ্গীতউপকরণ নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো হারিয়ে তিনি এখন বিলাপ করছেন। গত ২৯ জুন তার সঙ্গীতঘরটি বন্যায় প্লাবিত হয়। প্রায় কোমর পানি ছিল ঘরে। এতে ঘরে থাকা সঙ্গীত উপকরণগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জের উজানীগাও গ্রামের বাউল লাল শাহ নিভৃত জীবনযাপন করেন। ছোট্্র একটি মোদী দোকান দিয়ে সংসার চালান। পারিবারিক আবহেই বাউল গানের অনুরাগী হন তিনি। তিনি শাহ আবদুল করিমের শেষ প্রজন্মের অন্যতম শীষ্য হিসেবে পরিচিত। প্রতি বছর তার বাড়িতে নির্ধারিত দিনে সঙ্গীত আয়োজন হয়। এবছরও মানুষ উৎসব হয়ে সর্বমানুষের কল্যাণে আলোচনা ও প্রার্থনা হয়েছে। এবারের মানুষ উৎসবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাউল মকদ্দস আলম উদাসী, বাউল স¤্রাট শাহ আবদুল করিমের প্রধান শীষ্য বাউল আবদুর রহমান, বাউল কালা মিয়াসহ সিলেট বিভাগের শীর্ষ প্রকৃত বাউলগণ। মানুষ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মদনমোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট লেখক আবুল ফতেহ ফাত্তাহ। আলোচনা করেন কবি জাহেদ আহমদ, মালেকুল হক, আলফ্রেড আমেন, শিল্পী সত্যজিৎ রাজন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে দেশের লোকসঙ্গীত অনুরাগী ও শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। বিরল এই মানুষ উৎসবের প্রশংসা করেন বিদগ্ধজন।
বাউল লাল শাহ জানান, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের সহায়তায় তিনি সঙ্গীতঘরটি তুলেছিলেন। কয়েকটি যন্ত্রপাতি কিনেছিলেন। সবগুলো যন্ত্র পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কিভাবে গান করবেন সেই চিন্তায় অস্তির তিনি। তিনি বলেন, আমার সাধ্য নেই যন্ত্র কেনার। কিন্তু গান ছাড়া বাঁচতে পারবনা।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আহমদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেল বলেন, আমরা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে করোনায় জীবন থমকে যাওয়া বাউলদের সহযোগিতা দিয়েছি। বাউল লাল শাহর বিষয়টি আমরা জানিনা। তিনি কখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি। তবে আগামীতে অনুদান আসলে তাকে দেব আমরা।