হাওর ডেস্ক:
করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়।
গ্রেফতার করা হয় ৮ জনকে। এরপর বৃহস্পতিবার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদের প্রধান সহযোগী তারেক শিবলী গ্রেফতার করা হয়। হেফাজতে নেয়া হয় টিভি নাটকের অন্যতম প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘টেলিহোম’র প্রধান ও সাহেদের ভায়রা মোহাম্মদ আলী বশিরকে।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
বৃহস্পতিবার প্রতারণা মামলার প্রধান আসামি সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে একটি চিঠি ইমিগ্রেশন পুলিশে দেয়া হয়। ইমিগ্রেশনকে দেয়া চিঠি পুলিশ উল্লেখ করে, ‘প্রতারণা মামলার আসামি সাহেদের বিরুদ্ধে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হচ্ছে’।
সাহেদ সম্পর্কে যা বলেছেন অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ম্যাজিস্ট্রেট
রিজেন্ট হাসপাতালের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করতো রিজেন্ট হাসপাতাল। এছাড়াও সরকার থেকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার করে আদায় করতো তারা।
এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করে মোট ৩ কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল। এই সমস্ত অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ চেয়ারম্যান সাহেব (রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ) নিজে করতো।’
তিনি বলেন, ‘অনিয়ম, অপরাধ ও প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চেয়ারম্যান নিজেই ডিল করেছে, অন্যান্য কয়েকজন কর্মীও ছিল। চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে, জড়িত সবাইকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’
রিজেন্ট ও সাহেদের কুকর্ম বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে
ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে পৃথিবীর অন্য কোন দেশ এই ইতিহাস তৈরি করেছে বলে আমার জানা নেই। আমার ধারণা একমাত্র বাংলাদেশেই এই সমস্ত কিছু লোক টেস্টের নামে আমাদের দেশকে কলঙ্কিত করেছে। আমরা আশা করছি এই অপরাধের কারণে তাদের মারাত্মক শাস্তি হবে।
আমরা চাই না এই কোভিড-১৯ নিয়ে কেউ কোন প্রতারণার আশ্রয় নিক। আমরা এই অপরাধের সাথে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদসহ বেশকিছু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। একারণে আমরা ৮ জনকে আটক করেছি। তাদেরসহ জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধারায় মামলা করা হবে। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।