বিশেষ প্রতিনিধি::
পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জে তৃতীয়বারের মতো বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সোমবার বিকেলে বিপৎসীমার ৯ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৯০ মি.মিটার। উজানের চেরাপুঞ্জিতেও ভারীবৃষ্টিপাত হওয়ায় সুনামগঞ্জে ৩য় দফা বন্যার আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে সুনামগঞ্জের সন্নিকটে অবস্থিত ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের পানি পাহাড়ি ঢল হলে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে নামছে। এতে বিভিন্ন সীমান্ত নদী হয়ে পানি এসে পড়ছে প্রধান নদী সুরমায়। যার ফলে পানি বেড়েছে। নতুন করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি পয়েন্ট ও নবীনগর এলাকা আবারও প্লাবিত হয়েছে। পানি আরো বাড়লে দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মানুষেরা।
সোমবার বিকাল ৩টায় সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি বিপৎসীমার ৭.৮০ অতিক্রম করে বিপৎসীমার ৮.৮৯ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি এখনো অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জে গত ২৬ জুন থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত প্রথম দফা বন্যা হয়। বন্যায় জেলা শহর ও ছাতক পৌরশহরসহ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ওই বন্যায় রাস্তাঘাট, মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরে ৯ জুলাইকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ফের দ্বিতীয় দফা বন্যা হয়। এই বন্যায় প্রায় ১লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে আরো বেশি ক্ষতি হয়। দুই দফা বন্যার ক্ষত না শুকাতেই আবারও তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় দফা বন্যার পানি কিছুটা কমলেও এখনো নি¤œাঞ্চল থেকে পানি পুরোদমে সরেনি। এই অবস্থায় তৃতীয় দফা বন্যায় আরো ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র পূর্বাভাস দিয়েছিল ২০ জুলাইয়ের পর ৩-৪দিন উত্তরপূর্বাঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারও বন্যা হতে পারে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ ও সুনামগঞ্জের বর্ষণে বন্যাপরিস্থিতি আবারও সৃষ্টি হতে পারে। কারণ সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
ক্যাপশন: প্রথম দফা বন্যায় সুনামগঞ্জ ধারারগাও সড়কটি অক্ষত ছিল। দ্বিতীয় বন্যায় ভেঙ্গে গেলে বস্তা ফেলে পৌর কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি টিকিয়ে রাখে। তয় দফা বন্যার শুরুতেই আবারও ভেঙ্গে গেছে। তাই দুর্ভোগ বেড়েছে। জেলা শহরে আসতে পারছেন না চারটি ইউনিয়নের লক্ষ মানুষ।