ছাতক প্রতিনিধিঃ
ছাতকে পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষ এখন মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের চাপা উত্তেজনা থাকলেও গত ১০ মে শহরের তাতিকোনা এলাকার কালীমন্দির এবং হিন্দু বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় তাদের বিরোধ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। সম্প্রতি একটি পোষ্টার সাটানোকে কেন্দ্র করে শহর জুড়ে চলছে তোলপাড়। পৌরসভার প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু ও তার পুত্র উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বাবলুর ছবি যুক্তসহ তাদের বিরুদ্ধে উস্কানীমুলক শব্দ পোষ্টারে লিখা রয়েছে। কে বা কারা ‘পরিবহন শ্রমিক’ নাম ব্যবহার করে রাতের আধারে শহরে এসব পোস্টার সাটালেও পরবর্তীতে সাটানো পোষ্টারগুলো ছিড়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে শহর জুড়ে বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। চাপা উত্তেজনাও বিরাজ করছে দু’পক্ষের মধ্যে। জানা যায়, আব্দুল ওয়াহিদ মজনু ও একই এলাকার শাহ আলম পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ১০ মে শহরের তাতিকোনা এলাকার কালীমন্দির এবং হিন্দু বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় শাহ আলম পক্ষের লোকজন। এতে নারী-পুরুষসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ঘটনাটি সরজমিনে পরিদর্শন করেন সুনামগঞ্জের এসপিসহ উপজেলা পর্যায়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনুও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের সান্তনা দেন। ঘটনায় তাতিকোনা এলাকার রবিন্দ্র দাসের পুত্র তাপস দাস বাদী হয়ে একই এলাকার শাহ আলমের ভাই শরীফ আলমসহ ২২জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি মামলা (নং-৯) দায়ের করে। এ মামলায় আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনুর ইন্দন রয়েছে ভেবে তার সাথে শাহ আলম পক্ষের পূর্ব বিরোধ আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠে। এ ঘটনার জের ধরে ১০ জুন সকালে একা পেয়ে মাহফুজ বাবলুর উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দু’সহোদর বাবলু ও লাভলুসহ ১০-১২ জন গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় আব্দুল জলিল বাদী হয়ে শাহ আলম, শরীফ আলম ও নূর আলমসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় আরেকটি মামলা (নং-২৭) দায়ের করেন। প্রতিপক্ষরাও পৃথক মামলা দায়ের করেছে বলে জানা গেছে। ১৬ জুলাই শাহ আলমের গাড়ী চালক তাতীকোনা এলাকার সুদুর আলীর পুত্র ছাবুল মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা চালায় লোকজন। এতে ছাবুল মিয়া গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় আহত ছাবুল মিয়ার পিতা শুকুর আলী সুদুর বাদী হয়ে আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনুসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি মামলা(নং-১৯) দায়ের করেন। আলহাজ্ব আব্দুল ওয়াহিদ মজনু এ ব্যাপারে জানান, এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের অন্যায়-অত্যাচার ও ভ’মি দখলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারনে মূলত শাহ আলম পক্ষের সাথে তার বিরোধ। এ ছাড়া পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগ হওয়ার কারনে তার সাথে প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক বিরোধও রয়েছে। এভাবে প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র মূলক মামলায় জড়িয়ে সমাজে তাকে হেয় করার চেষ্টা করছে বলে জানান। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দেখার জন্য তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।##