হাওর ডেস্ক::
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই বলে মনে করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। ভ্যাকসিন কখনো পাওয়া যাবে না- এমন ভীতিজনক আশঙ্কার কথা জানতে চাইলে এই বিজ্ঞানী স্বীকার করেন, ‘আমাদের হয়তো এই ভাইরাসের সঙ্গে বাস করা শিখে নিতে হবে- এমন সম্ভাবনাতেই খুশি হতে হবে। এখন পর্যন্ত ভীতিজনক মনে হচ্ছে; ভ্যাকসিন না পেলে আমরা কী করবো? কিন্তু এটা কেবলই একটা সম্ভাবনা, একটা ভ্যাকসিন পাবোই এর শতভাগ নিশ্চয়তা নেই। আশা করা যেতে পারে। তবে এখন সংক্রমণের পরিমাণ কমিয়ে রাখতে আমরা সামাজিক শিষ্টাচার মেনে চলা, হাত ধোয়া, শ্বাসযন্ত্রের পরিচ্ছন্নতা মানা এবং মাস্ক পরার মতো বিষয়গুলো মেনে চলতে পারি।’
তবে এই ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজ অভাবণীয় দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। ভ্যাকসিন পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ‘সঠিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার ওপর মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি লাইভ ইভেন্টে জেনেভার ডব্লিউএইচ কার্যালয় থেকে যুক্ত হয়ে এসব কথা জানান এই ভারতীয় শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যক্ষ্মা ও এইচআইভি গবেষক। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বে ২০০ টিরও বেশি করোনার ভ্যাকসিন প্রকল্পের কাজ চলছে বলে ওই ইভেন্টে জানান ডব্লিউএইচও’র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন। ভ্যাকসিন উন্নয়ন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এর কয়েকটি খুবই উন্নত পর্যায়ে রয়েছে। করোনাভাইরাস বোঝাপড়া করতে অভাবণীয় দ্রুত গতিতে কাজ চলায় এটি সম্ভব হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী স্বামীনাথন বলেন, ‘সাধারণত একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবন দীর্ঘমেয়াদী এবং শ্রমসাধ্য প্রক্রিয়া… আমাদের যত বেশি (ভ্যাকসিন) প্রার্থী থাকবে, সফলতার তত বেশি সুযোগ থাকবে।’
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা অধিকাংশ ব্যক্তির শরীরে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, এর অর্থ হলো ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সুরক্ষামূলক প্রতিরোধ পাওয়ার ভালো সুযোগ আছে।
ওই লাইভ ইভেন্টে করোনাভাইরাসের ওষুধ থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন বিষয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন ডব্লিউএইচও’র প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন।
তিনি বলেন, অনুমিত ভবিষ্যতের যে পর্যন্ত ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে সেই সময় পর্যন্ত জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ‘সঠিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার ওপরই মনোযোগ দিতে হবে। এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাগুলো যদি সফল হয় আর আমরা এই বছরের শেষ নাগাদ একাধিক ভ্যাকসিন পেয়েও যাই, তারপরও এসব ভ্যাকসিনের শত শত কোটি ডোজ উৎপাদন করতে হবে, যে জন্য সময়ের প্রয়োজন হবে।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারিতে ১ কোটি ৫৫ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে আর মারা গেছে ৬ লাখ ৩০ হাজারের বেশি।