বিশেষ প্রতিনিধি::
নৌ দুর্ঘটনায় নিহত এক বালু ব্যবসায়ীর লাশ গত ২০ দিন ধরে খুঁজছেন স্বজনরা। এখনো সন্ধান পাননি। আদৌ পাবেন কি না তও জানেননা তারা। গত ১০ জুলাই গভীর রাতে নোঙ্গর করা বালুবাহী নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছিল ‘অন্তর হামিদ’ নামের একটি ভলগেট। এতে বালুবাহী নোঙ্গর করা নৌকাটি ডুবে মামা ভাগ্নে ডুবে যান। দুর্ঘটনার তিনদিন পর ভাগ্নের লাশ পাশের হাওরে ভেসে ওঠলেও ঘটনার ২০দিন পরও মামার লাশ পাওয়া যায়নি। তাই এখনো স্বজনরা দুর্ঘটনাস্থলে লাশটি খুজছেন। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা এমভি অন্তর হামিদ (২) পরিবহনের চালক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ভলগেটটি আটক করেছে। তবে দুর্ঘটনার পরই পালিয়ে যায় চালক ও তার সহযোগীরা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে সেলিম মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের তার মামা বাবুল মিয়া সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকার জাফলংয়ে নৌকা নিয়ে বালুপাথর আহরণ করতে যান। জাফলং বাংলাবাজারের নয়াগাঙের পাড়ে তারা দুটি নৌকা নোঙ্গর করে ৮-১০ জন বারকি শ্রমিকদের নিয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টায় এমভি অন্তর হামিদ (২) নামক একটি ভলগেট নোঙ্গও করা ওই দুটি নৌকার উপর উঠে গেলে নৌকা দুটি ঘুমন্ত শ্রমিকদের নিয়ে ডুবে যায়। এতে নৌকার ভিতরের ঘুমন্ত কয়েকজন শ্রমিক বেরিয়ে আসতে পারলেও সেলিম মিয়া ও তার মামা বাবুল মিয়া নিখোঁজ থাকেন। ঘটনার তিনদিন পর সেলিম মিয়ার মৃতদেহ নাইন্দার হাওরে ভেসে ওঠে। নিখোজ থাকেন বাবুল মিয়া। ঘটনার ২০দিন পর এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বাবুল মিয়া। এ ঘটনায় গত ১২ জুলাই সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় নিহত সেলিম মিয়ার ভাই সহকারি অধ্যাপক আজমান আলী এমভি অন্তর হামিদের চালক ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই এমভি অন্তর হামিদ (২) এর চালক ও সহযোগী পলাতক রয়েছে। পুলিশ ভলগেটটি আটক রেখেছে।
মামলার বাদী মো. আজমান আলী বলেন, এমভি অন্তর হামিদের চালক নোঙ্গর করা দুটি নৌকার উপর চলন্ত বার্জ নিয়ে উঠে পড়ায় আমার ভাই ও মামা নৌকায় ঘুমন্ত অবস্থায় তলিয়ে যান। দুর্ঘটনার তিনদিন পর ভাইয়ের লাশ ফেলেও আমরা এখনো মামার লাশ পাইনি। আমাদের লোকজন এখনো মামার লাশ খুঁজছেন। তিনি বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আহাদ বলেন, ঘুমন্ত বালু শ্রমিকদের দুটি নৌকার উপর এমভি অন্তর হামিদ ভলগেটটি উঠে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘুমন্ত কয়েকজন শ্রমিক বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও সেলিম ও বাবুল মিয়া নামের দুইজন নিখোঁজ ছিলেন। একজনের লাশ ৩দিন পরে উদ্ধার হলেও এখনো আরেকজন নিখোজ রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা ভলগেটটি আটক করেছি। এখন আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।