হাওরে ডেস্ক::
রংপুরের পীরগঞ্জে দুস্থদের জন্য ৩৪৫টি পশু কোরবানি দিয়েছেন সিঙ্গাপুর প্রবাসীরা। তাঁরা সবাই মুন্সীগঞ্জের বাসিন্দা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আনন্দ আর শোরগোল পড়ে গেছে। আজ রবিবার দ্বিতীয় দফায় উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের গনিরবাজারে রাজু মাস্টারের চাতালে ৩৫টি গরু কোরবানি করা হয়েছে। ঈদের দিন ৩১০টি খাসি কোরবানি করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় চার বছর আগে পীরগঞ্জের চেরাগপুর গ্রামের মাহমুদুন নবী রাজু মাস্টারের কাছে সিঙ্গাপুর প্রবাসী মুন্সীগঞ্জের আব্দুল মাজিদ একটি ছোট ট্রাক ভাড়া নিয়ে পীরগঞ্জ থেকে কোরবানির গরু ক্রয় করে নিয়ে যান। তার পর থেকেই রাজুর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে মুন্সীগঞ্জের আব্দুল মাজিদের। মুন্সীগঞ্জের প্রায় সাড়ে ৫০০ মানুষ মাজিদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে বসবাস করেন। বিশেষ কারণে সেখানে ঈদুল আজহায় কেউ কোরবানি দিতে না পারায় পাঁচ বছর ধরে সমন্বিতভাবে দেশেই তাঁদের এলাকায় এবং বাইরের জেলায় ঈদুল আজহার কোরবানি দিয়ে আসছেন। কোরবানি দিতে অক্ষমদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতেই ওই প্রবাসীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কোরবানির জন্য গবাদি পশু পাঠান।
এরই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে পীরগঞ্জবাসীর জন্য প্রবাসী মাজিদ প্রায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ৩৫টি গরু এবং ৩১০টি খাসি কোরবানির জন্য দিয়েছেন। ঈদের দিন (শনিবার) উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের গনিরবাজারে রাজু মাস্টারের চাতালে প্রথম দফায় সব খাসি এবং আজ রবিবার একই স্থানে দ্বিতীয় দফায় ৩৫টি গরু কোরবানি করা হয়। রামনাথপুর ইউনিয়নের দারিয়াপুর, করিমপুর, জামদানী, চেরাগপুর ও মাদারপুর গ্রামে এবং পাশের চতরা, কাবিলপুর ও রায়পুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের এক হাজার ১০০ মানুষের মধ্যে ওই মাংস বিতরণ করা হয়।
মাংস পেয়ে ধনশালা গ্রামের সুমন মিয়া তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, এমন মহৎ মানুষদের উদ্যোগের কারণে আজ কয়েক হাজার মানুষ মাংস পেলাম। তাঁদের এই ত্যাগ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। করোনা ও বন্যায় পীরগঞ্জে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম রুবেল তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কোরবানি আমাদেরকে ত্যাগ করতে শেখায়। মুন্সীগঞ্জের আব্দুল মাজিদসহ সিঙ্গাপুর প্রবাসী ভাইদের ত্যাগের প্রতিদানে পীরগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে তাদের জন্য দোয়া করি। তারা যেন আরো বেশি করে দান করেন।
রাজু মাস্টার বলেন, মহামারি করোনার কারণে এবারের ঈদুল আজহায় পীরগঞ্জে অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি। তাদের জন্য সিঙ্গাপুর প্রবাসী আব্দুল মাজিদ ভাইয়ের কাছ থেকে ৩১০টি খাসি এবং ৩৫টি গরু নিয়ে তাদের নামেই কোরবানি করেছি। ওই মাংস প্রায় তিন হাজার মানুষ এবং কিছু হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।