অনলাইন ডেক্স::
চট্টগ্রামের সীতাকু- পৌর সদরের আমিরাবাদ ও প্রেমতলায় ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে আমিরাবাদ এলাকা থেকে ‘জঙ্গি’ দম্পতিকে গ্রেনেড, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে দুই মাস বয়সী এক শিশুও রয়েছে। অন্যদিকে, প্রেমতলায় পুলিশের সঙ্গে ‘জঙ্গি’দের গোলাগুলি চলছে বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুর ৩টার দিকে সীতাকু- পৌর সদরের আমিরাবাদ এলাকার সাধন কুঠি নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওই বাড়ির নিচতলা থেকে ‘জঙ্গি’ দম্পতিকে আটক করা হয়।
পুরুষ ব্যক্তিটি নিজেকে জসিম উদ্দিন নামে পরিচয় দিয়ে ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়েছেন। তার স্ত্রীর নাম আর্জিনা। তাদের সঙ্গে দুই মাস বয়সী এক শিশুপুত্র রয়েছে। আর্জিনার কোমরে বোমা বাঁধা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই বাড়ির মালিক সুভাষ দাস জানান, গত ৪ মার্চ জসিম তাঁর স্ত্রী ও দুই শ্যালক নিয়ে বাড়ি ভাড়া করতে আসেন। ভাড়া নেওয়ার পর জসিমের দুই শ্যালক চলে যান। ভাড়া দেওয়ার সময় জসিমের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি নেওয়া হয়। তবে ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বাড়ির দরজা জানালা সব সময় বন্ধ রাখতেন জসিম। এ নিয়ে সন্দেহ দেখা দিলে তিনি (সুভাষ দাস) ওই পরিচয়পত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, এটা ভুয়া পরিচয়পত্র। পরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জোর করে তিনি জসিমের বাসায় ঢুকে দেখতে পান, সেখানে প্রচুর তার, সার্কিট। এসব দিয়ে কী করা হয় জানতে চাইলে জসিম উত্তর দেন, তাঁরা সার্কিট বানানোর কাজ করেন।
তিনি জানান, এরপর সেখান থেকে একটি সার্কিট নিয়ে আসেন। পরে তিনি সেটা পরিচিত এক বিদ্যুৎ মিস্ত্রিকে দেখান। মিস্ত্রি জানান, এটা টাইমার। এটা জানার পর আজ সকালে তিনি পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ জানায়, বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করার সময় তাদের বাধা দেন জসিম ও আর্জিনা। এক পর্যায়ে পুলিশ জোর করে বাসায় প্রবেশ করলে আর্জিনা তার কোমরে হাত দিতে যান। সেটা দেখে বাড়িওয়ালা ও তার স্ত্রী ওই নারীর দুই হাত শক্ত করে ধরে ফেলেন। পরে পুলিশ আর্জিনার কোমর থেকে বোমা উদ্ধার করে।
সীতাকু- সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, দেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসাবে বাড়িওয়ালাদের সচেতন করা হচ্ছিল। বাসা ভাড়া দেওয়ার আগে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য জানার আহ্বান জানানো হচ্ছিল। আজ (মঙ্গলবার) দুপুর আড়াইটার দিকে এই বাড়ির মালিক সুভাষ দাস ভাড়াটেকে জঙ্গি সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলে। জঙ্গি দম্পতির বাসা থেকে প্রচুর পরিমাণে বোমা তৈরির সরঞ্জাম, গ্রেনেড ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, একই দিনে পৌর সদরের প্রেমতলায় আরেকটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, বাড়িটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি চলছে।