সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, তাহিরপুরঃ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার পল্লীতে আ’লীগের দুই নেতার লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায় ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকালে উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট নতুন বাজারের সড়ক পাড়ায়।
উভয় পক্ষের গুরুতর আহত ৩০জন কে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এবং অন্যন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,
গোলকপুর গ্রামের বাসিন্দা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহ-সভাপতি আবুল খায়ের ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি, স্থানীয় ইউপি সদস্য একই গ্রামের অমৃতপুরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম এ দুই নেতার মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে বালিয়াঘাট নতুন বাজারে আবুল খায়ের শফিকুল ইসলামকে গালিগালাজ করে বাড়িতে চলে যায়।
পরে শনিবার দুপুরে আবুল খায়ের বাড়ি থেকে বালিয়াঘাট নতুন বাজারে আসার পথে শফিকুল ইসলামের লোকজন আবুল খায়েরকে বেধড়ক মারপিট করে।
বিকালের দিকে শফিকুল ইসলামের পক্ষের সুহেল মিয়া বাজারে আসলে আবুল খায়েরের লোকজন তাকে মারপিট করে।
একপর্যায়ে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন বিকাল ৫টার দিকে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে শফিকুল ইসলামের পক্ষে আহতরা হলেন, সেনাজুল (৩৫), হৃদয় (২৫), কাবিল মিয়া (৪০), কিবির মিয়া (২২), শালমান মিয়া (৩০), দুলাল মিয়া (২৫), আলফাজ উদ্দিন (৩০), সিরাজুল ইসলাম (২৫), সুহেল মিয়া (৪০),কামরুল (৪৫), ফকির আলম (৪৫), মেহেদী (২৩), নবী হোসেন (২০), জাকিল মিয়া (৪৫), হেলাল মিয়া (২৫)।
উপরদিকে আবুল খায়েরের পক্ষের আহত হলেন, আবুল খায়ের (৪৫), উকিল মিয়া (৪০),সেলিম মিয়া (৩৫), সবুজ মিয়া (৩৫), পারভেজ মিয়া (২২), সাজুল মিয়া (৪৫), সাদিকুর (৩০), দিলসাদ মিয়া (৩৫), নবী হোসেন (২০), রফিক মিয়া (৩৫), হাবিবুল (৩০) সাহিবুল (৩৩), রফিক (৪০)।
ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আবুল খায়ের শুক্রবার রাতে মদ্যপান করে মাতাল অবস্থায় আমাকে অকারনে গালিগালাজ করে। বিষয়টি আমার ভাই ভাতিজা শুনতে পেয়ে শনিবার সকালে খায়েরের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে সে উত্তর না দিয়ে অন্য গ্রামের লোকজন দিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করিয়েছে।
বিষয়টি অস্বীকার করে আবুল খায়ের বলেন আমি শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলামকে গালিগালাজ করিনি। শনিবার দুপুরে বাজারে আসার পথে তার লোকজন-ই রাস্তায় আটকিয়ে বিনা কারনে আমাকে মারপিট করে এবং দুই লাখ টাকা, মোবাইল ও ডেবিট কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
তাহিরপুর অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানিয়েছেন,
সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমিসহ ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে এবং এখনও এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।